নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের চোখে সিলেট সিটি নির্বাচন

, জাতীয়

মুজাহিদুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-07-15 07:34:53

সিলেট থেকে: ৩০ জুলাই সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে জোর প্রচার-প্রচারণা। ভোর থেকে মধ‍্যরাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ছুটছেন নগরীর এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ভোটারদের সমর্থন পেতে মরিয়া এসব প্রার্থীরা।

ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সিটির ভোটাররা এমনকি সাধারণ মানুষ তাদের পক্ষে আছেন এমন দাবি প্রত‍্যেক প্রার্থীর। কিন্তু যাদের ভোটে নির্ধারিত হবেন নগরপিতা তারা কি ভাবছেন?

মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী এলাকায় সরেজমিনে নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের মতামত তুলে ধরছে বার্তা২৪.কম।

নগরীর ব‍্যস্ততম এলাকা শাহে ঈদগাহ। পাশে রয়েছে সিএনজি-অটোরিকশা স্ট‍্যান্ড। কথা হয় সিএনজি অটো রিকশা চালক হাসানের সঙ্গে।

৫ নং ওয়ার্ডের এ ভোটার বার্তা২৪.কমকে বলেন, নির্বাচন আসলেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমাদের কাছে আসে। নির্বাচন শেষে দেখা যায় যেসব প্রতিশ্রুতি রাখেন না। এর মধ্যে কিছু কিছু কাজ করলেও দেখা যায় অনেক কাজই তারা শেষ পর্যন্ত করেন না। 

হাসানের কথা শেষ হতে না হতেই পাশ থেকে আরেকজন সিএনজি চালক বলে উঠলেন, একজন মেয়র কে যদি সুযোগ না দেওয়া হয় তাহলে কিভাবে কাজ করবেন। যেমন আমাদের মেয়র আরিফ। পাঁচ বছরের মধ্যে তিন বছর ছিলেন কারাগারে। এরপরে যখন তিনি ছাড়া পেয়েছেন বাকি সময়টুকু যে উন্নয়ন করেছেন আগের মেয়র কামরান তার কিছুই করেননি। হিসেবে আমরা বিএনপি'র প্রার্থী আরিফুল হককে যোগ্য মনে করছি। আর একবার সুযোগ পেলে বেশি বেশি উন্নয়ন করবো।

খুব স্বল্প সময়ে দৃশ্যমান কিছু উন্নয়নমূলক কাজের মূল‍্যায়ন করে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে পছন্দের তালিকায় প্রথমদিকে রেখেছেন নগরীর বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষেরা।

তবে উন্নয়নের কাজের জেরে অনেকের বিরাগভাজনও হয়েছেন সাবেক এই মেয়র। অভিযোগ রয়েছে সড়ক প্রশস্ত করতে গিয়ে অনেকের দোকানপাট উচ্ছেদ করেছেন এমনকি ভেঙেছেন ঘরবাড়িও। সেক্ষেত্রে এই ব‍্যবসায়ী শ্রেণীর ভোটে পিছিয়ে পড়তে পারেন তিনি। এর উপর রয়েছে সদ‍্য দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়া বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান সেলিম। তিনি সিলেট সিটির বিদ্রোহী প্রার্থী। জামায়াতের প্রার্থী তো আছেই। এ সমস্ত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বিজয়ী হতে রীতিমত বেগ পোহাতে হবে সদ‍্য বিদায়ী এই মেয়রকে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি যে স্বল্প সময় পেয়েছি নগরবাসীর জন্য সর্বোচ্চ কাজ করেছি। যাতে একটা পরিচ্ছন্ন নগর গড়ে তুলতে পারি সেজন্য নগরবাসীর সমর্থন চাই।

অপরদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বদর উদ্দীন আহমদ কামরান বিগত দুই মেয়াদে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলেন। তাকে বলা হয় জনগণের কামরান। দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন করতে না পারলেও জনসম্পৃক্ততা আর ২০ দলীয় জোটের বিরোধের কারণে তিনি নগরপিতা হয়ে যেতে পারেন বলে আশাবাদ নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত দলের নেতাকর্মীদের।

এ প্রসঙ্গে কামরান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি জনগণের সঙ্গে ছিলাম এবং আছি। মেয়র আরিফের যে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে সে উন্নয়নের মাস্টারপ্লান কিন্তু আমি করেছিলাম। সিলেটের মানুষ চাই একটু ভালোবাসা, ভালো ব্যবহার। হিসেবে সিলেটে ভোটের আমাকে মূল‍্যায়ন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

জিন্দাবাজার মোড়ে ভ্যানে করে কাঁঠাল বিক্রি করছেন ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মোহাম্মদ বাচন আলী। তিনি বলেন ভোট যেহেতু আছে সেটা কাউকে না কাউকে দিতে হবে। তাই দেশের বুঝিয়ে জেনেশুনে যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেব। যে আমাদের দেশ ও জনগণের উপকার করবে তাকে ভোট দেবো।

লিডিং ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী হক বলেন, আমি এবারই ভোটার। নতুন ভোটার হিসেবে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত। তাছাড়া এখানে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হবে বলে আশা করছি। আমার নিজের পছন্দের প্রার্থী রয়েছে তাকে ভোট দিব।

এ সম্পর্কিত আরও খবর