অনশনরত শ্রমিকদের পাশে তাদের সন্তানরা

খুলনা, জাতীয়

মানজারুল ইসলাম,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,খুলনা | 2023-08-24 17:21:18

“পিতার চাকুরির নিশ্চয়তা চাই; পিতার মজুরি কমিশন চাই; বাঁচার মতো বাঁচতে চাই; আমি শ্রমিকের সন্তান এটাই কি আমার অপরাধ; পিতা কেন অনশনে, জবাব চাই” এসব কথা কাগজে লিখে রাজপথে নেমে স্লোগান দিয়েছে খুলনায় আমরণ অনশনে অংশ নেয়া পাটকল শ্রমিকের সন্তানেরা।

বুধবার (১ জানুয়ারি) বছরের প্রথম দিনেও শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছে। পাটকল শ্রমিকদের দ্বিতীয় দফার আমরণ অনশনের ৪র্থ দিনেও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে শ্রমিকরা ছিলেন সোচ্চার। তবে অনশনে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অসুস্থ শ্রমিকের সংখ্যা। একদিকে শীত আরেকদিকে অসুস্থতা নিয়েও অনশন ছাড়েননি শ্রমিকরা।

পাটকল শ্রমিকদের অনশন/ছবি: বার্তা২৪.কম

শ্রমিকদের আমরণ অনশনের কারণে খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে খালিশপুর, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, দৌলতপুর, আলিম ও ইস্টার্ন জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ আছে। এতে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দিনরাত এক করে প্রতিটি মিলের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চলেছেন শ্রমিকরা। বাবার অনশন দেখে সন্তানরাও রাজপথে নেমে আসে।

শ্রমিক নেতারা জানান, বছরের শুরুতে অর্ধলক্ষ শ্রমিকের জীবন এখন অনিশ্চিত। পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে আছে সবাই। প্রতিশ্রুতি অনেক হয়েছে, এবার আর কোনো প্রতিশ্রুতি শুনতে চাই না। এবার শ্রমিকরা মজুরি কমিশন না নিয়ে ঘরে ফিরবে না। জীবনের বিনিময়ে হলেও মজুরি কমিশন মেনে নিতে হবে। দাবি মেনে না নিলে অনশনের ৫ম দিন বৃহস্পতিবার থেকে পরিবার-পরিজন থেকে আন্দোলন শুরু করার কথাও বলেন শ্রমিক নেতারা।

অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা/ ছবি: বার্তা২৪

শ্রমিক নেতা খলিলুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে অসুস্থ শ্রমিকের সংখ্যা। বছরের প্রথম দিনেও দেশজুড়ে যখন আনন্দ উৎসব, তখন শ্রমিকরা একটু মজুরির আশায় আমরণ অনশন করছে। ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে অসংখ্য শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

বিজেএমসি সূত্র থেকে জানা যায়, খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে ৭টির উৎপাদন বন্ধ আছে। বন্ধ থাকা পাটকলগুলোতে প্রতিদিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। শুধুমাত্র যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলে উৎপাদন চালু আছে। মিল দুটিতে প্রতিদিন উৎপাদিত পাটপণ্যের পরিমাণ ৮৬ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন। বাজার হিসাব অনুযায়ী, পাটকলগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি টাকার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

অনশনে থাকা শ্রমিকদের সন্তানরাও রাজপথে নামে/ ছবি: বার্তা২৪.কম 

বিজেএমসির খুলনার আঞ্চলিক সমন্বয় কর্মকর্তা বনিজ উদ্দিন মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে মাত্র ২টি পাটকলে পাটপণ্য উৎপাদন হচ্ছে, যা স্বাভাবিক সময়ের চার ভাগের একভাগ। বন্ধ থাকা ৭টি পাটকলে প্রতিদিন ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন পাটপণ্য উৎপাদিত হতো। চারভাগের একভাগ পাটপণ্য উৎপাদিত হওয়ায় প্রতিদিন কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর