শীত ওদের জন্য আশীর্বাদ

রংপুর, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-08-28 23:03:10

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছামিউল ইসলাম। পড়ালেখার স্বপ্ন আর জীবিকার তাগিদে খেলাধুলার বয়সে গ্রামের মেঠোপথ ছেড়েছে। শীত মৌসুমে সন্ধ্যা নামার আগেই শহরের রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে দু’পয়সা রোজগারের জন্য। একচাকার ঠেলাগাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় অচেনা শহরের পথে ঘাটে। বিক্রি করে ভাপা পিঠা। বিক্রি করা পিঠার টাকায় ভবিষ্যৎ সাজাতে চায় এই স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী।

রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে কথা হয় বাবু নামে আরেক তরুণের সঙ্গে। পিঠা বিক্রি করতে আসা এই তরুণ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বাবা-মা অর্থের অভাবে পড়ালেখা করাতে পারে না। এখান থেকে কিছু টাকা আয় করতে পারলে বাড়িতে বাবা-মার কাছে পাঠাই। কিছু রেখে দেই, তা দিয়ে এক বছর পড়ালেখার খরচ চালাই।’

ছামিউলের মতো বাবু, হাবীবসহ তের তরুণ কুড়িগ্রামের রৌমারী থেকে রংপুরে এসেছে। পিঠা বিক্রি করে পড়ালেখার খরচ জোগানো ওদের উদ্দেশ্য। তাই অনেকের জন্য কষ্টের হলেও শীত আশীর্বাদ হয়ে আসে মৌসুমি এই পিঠা ফেরিওয়ালাদের জন্য।

শীত আসলে ছামিউল ইসলামের মতো অনেকেই পিঠা বিক্রি করে, ছবি: বার্তা২৪.কম

সবাই যখন মোটা কাপড় মুড়িয়ে শীতের তীব্রতা নিবারণে ব্যস্ত, ওরা তখন চালের গুঁড়া তৈরি, নারিকেল আর গুড় ভাঙে। ওদের দিনভর পরিশ্রমে প্রস্তুত হয় শীতের অন্যতম অনুষঙ্গ ভাপা পিঠার উপকরণ। বেলা গড়িয়ে বিকেল হলে তারা বেরিয়ে পড়ে রংপুর নগরের সড়কে। অবস্থান নেয় মানুষের কোলাহলের ভিড়ে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত তাদের ভাসমান পিঠার দোকানে ভিড় জমায় চাকরিজীবী আর পথে ঘাটে ঘুরে বেড়ানো সাধারণ মানুষ। ১০ টাকার বিনিময়ে মা-চাচিদের হাতের তৈরি ভাপা পিঠার সেই স্বাদ ছামিউলদের কাছ থেকে খুঁজে নেন ভোক্তারা।

পিঠা খেতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শীতের শুরুতে গ্রামের বাড়িতে মা-বোনেরা চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা বানায়। কিন্তু নাগরিক জীবনে শহরের বাসা-বাড়িতে এসব তৈরি করে খাওয়া হয় না। তাই ভাসমান পিঠার দোকান থেকেই কিনে খাই।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর