ট্রাফিক পুলিশের কারণে বেঁচে গেল এক প্রাণ!

রংপুর, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর | 2023-09-01 15:04:11

রংপুরের পায়রাবন্দের ঘাঘট নদীর তীরে অনুষ্ঠিত ইজতেমায় এসেছিলেন আতিয়ার রহমান। শামিয়ানার নিচে বয়ান শুনতে শুনতে হঠাৎ অসুস্থবোধ করেন। কাউকে কিছু না জানিয়ে সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু রাত ১২টার দিকে তার রক্তচাপ বেড়ে যায়। আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

এ অবস্থায় কয়েকজন যুবক তড়িঘড়ি করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য ছুটোছুটি শুরু করে। মাঠে ফায়ার সার্ভিস ও জরুরি সেবার জন্য দুটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও ওই সময় দেখা মেলেনি কারো। মুমূর্ষু অবস্থায় ছটফট করতে শুরু করেন আতিয়ার। যেন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি।

এ সময় ছুটে আসেন নাজরান রউফ নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) সহকারী কমিশনার। আছেন আরএমপির ট্রাফিক দক্ষিণ জোনের দায়িত্বে। এই পুলিশ কর্মকর্তা কোনো উপায় না পেয়ে নিজেই তার গাড়িতে করে অসুস্থ আতিয়ারকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাকে জরুরি ভিত্তিতে হৃদরোগ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

ওই রাতের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে ছোটাছুটি করেন তিনি। ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুর ব্যবস্থা করেন। ওই রাতেই আতিয়ারের অসুস্থতার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন তার পরিবারও। সকালে আতিয়ার রহমান কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নেয়া হয়।

এদিকে এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার রাতে। ইজতেমা মাঠে দায়িত্ব পালনের সময় অসুস্থ আতিয়ারের পাশে ছুটে এসে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর মহানগরীর বড়বাড়ি বানিয়াপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আতিয়ার রহমান। পেশায় একজন মুদি দোকানি। আতিয়ারের সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

আরপিএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজরান রউফ বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে আমার ডিউটি ছিল। কিন্তু আমি ১২টার পরও সেখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করি। এ সময় হঠাৎ এক মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে কয়েকজনকে ছোটাছুটি করতে দেখে আমি তাদের কাছে যাই। সেখানে কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করতে না পেরে আমি নিজেই ওই অসুস্থ রোগীকে আমার গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালে ওই রোগীর পাশে ছিলাম। চেষ্টা করেছি তার বিপদে একজন মানুষ হিসেবে সহযোগিতা করার।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর