গাজীপুর নির্বাচনে শেষদিনের প্রচারণার ব্যস্ত প্রার্থীরা

, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 09:51:13

গাজীপুর: রাজধানীর লাগোয়া গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেষদিনে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৬ জুন) ভোটগ্রহণ। আজ রোববার (২৪ জুন) প্রচারণার শেষ দিন। রাত ১২টা পর কোনো ধরনের প্রকাশ্য প্রচারণা করা যাবে না বলে নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছেন। তাই শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থী ও তার সহযোগীরা।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) মোহসিন রেজা।

তিনি জানান, ২৪ থেকে ২৭ জুন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ২৯ প্লাটুন বিজিবি নির্বাচনী এলাকায় নিয়োজিত থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

গাজীপুরে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে সাধারণ ভোটাররা সিটি করপোরেশনের নানা অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেছেন। প্রার্থীরাও সাধ্যমতো আশ্বাস দিচ্ছেন সমস্যা সমাধানের।

সবকিছু ছাপিয়ে নির্বাচনে স্থানীয় ইস্যুর পাশাপাশি জাতীয় ইস্যুও জায়গা করে নিয়েছে। নির্বাচনটি অনেকটা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মান-সম্মানের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।

দুই দলের হেভিওয়েট নেতারা গাজীপুরে অলিগলিতে নিজ দলের প্রার্থীর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কর্মি-সমর্থকদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। শেষ মুহূর্ত বলে কথা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। তাদের যেসব বক্তৃতা ও কথাবার্তা তাতে মনে হচ্ছে, যেহেতু জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করছে, সেহেতু তারা যেকোনো সময় নাশকতার সৃষ্টি করে তারা খবরের শিরোনাম হতে চাইছে। আমি অনুরোধ করছি, আসুন গণতন্ত্রের সঙ্গে আমাদের প্রত্যেক ভোটারকে আমরা সম্মান দেখাই।

অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, নির্বাচনের আগে আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। অনেক কর্মীকে গ্রেফতার করে করে নরসিংদী, টাঙ্গাইল ও ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বহু কর্মীর হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমরা শঙ্কিত।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের জানান, কোথাও বিএনপির নেতা-কর্মিদের হয়রানি করা হচ্ছে না, বরং সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমি যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই জনসমুদ্র সৃষ্টি হচ্ছে; এতে আমার দোষের কিছু নেই।

১৮ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। আদালতের নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে লম্বা বিরতির পর নির্বাচনী প্রচারের মধ্যদিয়ে সরব হয়ে উঠে গাজীপুর।

গত ১৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও আদালতের নির্দেশে নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। পরে উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করায় প্রায় এক মাস ১২ দিন শুরু হয় দ্বিতীয় দফার আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা।

তবে নির্বাচনী প্রচারণার শেষদিনে দেখা গেছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। সবকিছু ছাপিয়ে ভোটাররা চান- এলাকার উন্নয়ন।

টঙ্গি বাজারের বাসিন্দা এম এ হানিফ সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেন, নির্বাচনে ভোটাররা ভেবেচিন্তে ভোট দেবেন। বর্তমানে সিটি এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, নোংরা পরিবেশ। তাছাড়া সামনে সংসদ নির্বাচন, সেটাকেও সামনে রেখেও ভোট দেবার বিষয়টি চিন্তাভাবনা করছেন।

নতুন ভোটার ফারদিন আহমদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি এবার প্রথমবারের মতো ভোট দিতে যাবো। এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করছে, আমার প্রত্যাশা- নির্বিঘ্নে যেন ভোট দিতে পারি। বলতে পারেন, এটাই আমার প্রথম চাওয়া।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মো. নাসির উদ্দিন (হাতপাখা), ইসলামী ঐক্য জোটের মাওলানা ফজলুর রহমান মুন্সী (মিনার), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন (কাস্তে) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ (টেবিল ঘড়ি) প্রতীক।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোট আয়তন ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গ কিলোমিটার। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২৫টি আর ভোটকক্ষ ২ হাজার ৭৬১টি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর