নবীর শহরে অন্য এক বাংলাদেশ

, জাতীয়

জাহিদুর রহমান,স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 16:03:31

সৌদি আরব(মদিনা)থেকে: ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্র শহর মদিনা। মুসলমানদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওযা ঘিরে বছরজুড়েই ব্যস্ত থাকে এ শহর। এ ব্যস্ততা ঘিরে প্রবাসীরা গড়ে তুলেছেন নানা ধরনের ব্যবসা বানিজ্য। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিষ্ঠিত অন্যতম বৃহৎ মসজিদ "মসজিদে নববীর" চারপাশে চোখ ধাঁধানো বাংলার ছড়াছড়ি।

প্রবাসীদের কেউ এখানে হোটেল,কেউ বা রেষ্টুরেন্টে কেউ বা রকমারী খেঁজুর,অনেকেই আবার বোরকাসহ নানা ধরনের ব্যবসা খুলে নিজেরাই গড়ে তুলেছেন ভিন্ন আরেক বাংলাদেশ।

৬২২ খ্রীষ্টাব্দে অনুসারীদের নিয়ে মহানবী মক্কা থেকে মদীনায় আগমন বা হিজরতের পর হযরত মুহাম্মদ (সা) নির্মাণ করেছিলেন এই "মসজিদে নববী"। সেই মসজিদের ২১ নম্বর গেইট ধরে পুরাতন এয়ারপোর্ট রোডের দিকে এগুতেই চোখে পড়ে বাংলায় লেখা সারি সারি সাইনবোর্ড।

তার মধ্যে "ঢাকা হোটেল" নামের বিশাল আকারের সাইনবোর্ড দেখে ভেতরে ঢুকতেই স্বাগত জানান প্রতিষ্ঠাতা মো: ইমরান(৪০)। চট্রগ্রামের আনোয়ারা থানার দেউতলা গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ইমরান।

২৬ বছর আগে ভাগ্য অন্বেষণে মহা নবীর শহরে এসে নিজের মেধা আর পরিশ্রমে আজ তিনি সফল উদ্যোক্তাদের একজন। এসেছিলেন মসজিদের মোয়াজ্জিন হিসেবে। পর্যায়ক্রমে ইমাম।পরে একটি মোটরপার্টসের দোকানের সেই ক্যাশিয়ার আজ সহদোর হাফেজ মো: লোকমানকে নিয়ে মদিনার বুকে সফল হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী।

নামটা "ঢাকা হোটেল" কেন?"আমার  প্রিয় স্বদেশকে তুলে ধরতে। কারণ ঢাকা মানেই বাংলাদেশের রাজধানী। বলতে পারেন প্রবাসে এটা আমাদের দেশ প্রেমের প্রতীক।

আমি নিজেকে সার্থক মনে করি এটা ভেবে যে,আমার প্রয়াসে আজ ৪০ জন প্রবাসী এখানে কাজ করছেন। দেশে ভালোভাবে ৪০ টা পরিবার চলছে। এটাই আমার আনন্দ।আমার অর্জন" জানান মো: ইমরান।

সৌদি আরবজুড়ে তো মন্দা,কাজের ক্ষেত্রে  হাহাকার। সেখানে আপনার বিরামহীন সফলতার রহস্য? "খুবই সাধারণ। ব্যবসায় লাভ ক্ষতি থাকবে। এটা মেনে নিয়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।

সফল এ ব্যবসায়ী জানান, আরেক টি কথা মনে রাখতে হবে,আমি তো দেশ থেকে টাকা এনে এতকিছু করি নি। এখানে আয়ের অর্থে যেমন লাভ করেছি,তেমনি হয়তো সাময়িক ক্ষতিও হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক।দিন তো সব সময় এক রকম থাকে না।

মদিনায় এই ব্যবসায়ীর বেশ কিছু পদক্ষেপ আর প্রয়াস এখন অনুকরণীয়। যেমন কর্মীদের কোম্পানীর মতোই বোনাস দেন।পরিবারের সদস্যদের সাথে মিলিত হতে দু বছরে এক বার দেশে আসা যাওয়ার টিকেট দেন।

"আমি কিন্তু হিজরী সন ধরে কর্মীদের বেতনও দেই। কারণ কি জানেন,হিজরী সন ধরে বেতন দিলে শ্রমিকরা বছরে ১৭ দিনের বাড়তি পারিশ্রমিক পায়।ওদের এটা দিতে পেরেও আমি আনন্দ পাই"যোগ করেন মো: ইমরান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর