প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে তিস্তার পানি গড়াবে কী?

বিবিধ, জাতীয়

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-15 12:23:11

নয়াদিল্লি থেকে: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে ভারত আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পিতবার (৩ অক্টোবর) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহনকারী বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছানোরর কথা রয়েছে। সেখানে দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ও অন্যান্যরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। ভারত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হোটেল তাজে অবস্থান করবেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে দু’দিন ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ইন্ডিয়ান ইকোনোমিক সামিট-২০১৯ এ যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। নয়াদিল্লির হোটেল তাজ প্যালেসে দু’দিন ব্যাপী সামিটের মধ্যমণি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সামিটের শেষ দিন ৪ অক্টোবর ভারতীয় সময় বেলা ৩টার দিকে বক্তব্য দেবেন তিনি। সেখানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের গল্প শোনাবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

এই সফরের মূল আকর্ষণ আগামী ৫ অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক। সেখানে তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১০ থেকে ১২টি সমঝোতা স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে। ৫ অক্টোবর সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউসে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে আয়োজিত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।

বৈঠকে সীমান্তে হত্যা নিয়ে এবং দু’দেশের মধ্যে আরও অবাধ যাতায়াত নিয়ে আলোচনা হবে। বাণিজ্য শুল্কমুক্ত, নৌ ও সমুদ্র পথে যোগাযোগ নিয়ে আলোচনা হবে। রেল, বিমান ও সড়কে যাতায়াত আরও সহজ করতে করণীয় নির্ধারণ হবে। গঙ্গা ও তিস্তার পানি বণ্টন, নৌ পরিবহনের পরিধি ও সংখ্যা আরও বাড়ানো আলোচনায় স্থান পাবে। সমুদ্র সহযোগিতা কীভাবে আরও বাড়বে তাও আলোচনা হবে।

তিস্তা ব্যারেজ

 

ভারতের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এই সফরে অনানুষ্ঠানিক তিস্তা পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সমাধান হচ্ছে না। কেন না এই সফরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আলোচনার টেবিলে না আসার পরিপ্রেক্ষিতে সফরে তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি হচ্ছে না। কাজেই প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে তিস্তার জল গড়াবে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর কথাতেও একই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘এটা মোটেই দ্বিপাক্ষিক সফর না, প্রধানমন্ত্রী বহুপাক্ষিক মিটিংয়ে এ আসছেন।’

ভারত সরকারের আমন্ত্রণে আসলেও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সেভাবে কোনো সাজ সজ্জা চোখে পড়েনি। যে তাজ প্যালেসে সামিট হবে সেখানেও নেই বাড়তি আমেজ। সবচেয়ে বড় কথা যে, সামিটে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন সেখানে ভারতের কোনো পর্যায়ের মন্ত্রী থাকছেন না। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই উচ্চ পর্যায়ের নেতা।

চারদিনের সফর শেষে আগামী ৬ অক্টোবর রাত ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ত্যাগ করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। সফরকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর ৫ অক্টোবর সকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। দেশে ফেরার আগে কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন- প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর