বাংলাদেশে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ‘ধারাবাহিক পদক্ষেপ’

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-26 18:50:59

পররাষ্ট্রসচিব মো. শহিদুল হক বলেছেন যে সরকার ‘প্যালারমো প্রোটোকল’ অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ‘ধারাবাহিক পদক্ষেপ’ শুরু করা হবে।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত মানব পাচার রোধ সম্পর্কিত এক কর্মশালা উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে প্যালারমো প্রোটোকল অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। যা হবে আইন প্রয়োগকারী উপকরণ। অনুমোদন পেলেই মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এক জোট হয়ে পদক্ষেপ নেবে।’

বাংলাদেশের মানব পাচার মোকাবিলা করার চ্যালেঞ্জগুলো খু্বই বৈচিত্র্যময়। পাচারকারীরা খুব স্মার্ট এবং এ ব্যবসায় তৃতীয় বা চতুর্থ প্রজন্মের মানুষরাও জড়িত বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রসচিব।

বাংলাদেশ সব সময় নিরাপদ অভিবাসনের প্রচার করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে। অভিবাসনের নামে বিশাল জনগোষ্ঠী পাচারও হচ্ছে।’

আইওএম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো এবং মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক পরামর্শক ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন উপস্থিত ছিলেন।

মানব পাচার এবং অভিবাসীদের পাচার বৈশ্বিক ঘটনা এবং এগুলো বাংলাদেশের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন কর্মশালায় অংশ নেওয়া অন্য বক্তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের পাচার হওয়ার বিষয়টি চেপে যাওয়ায় পাচারের স্পষ্ট পরিসংখ্যান পাওয়া জটিল বলেও মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ নিয়ে এক রিপোর্টে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে মোট তদন্ত প্রতিবেদনে বা এফআইআর-এ মোট ৭৭০ জনের পাচার হওয়ার রিপোর্ট করা হয়েছিল। বাংলাদেশে পুলিশের কাছে ৭৭৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ৫৪৬ জনকে পাচারের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৫২ জন নারী এবং ৯১টি শিশু ছিল।

মার্কিন কূটনীতিক ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘মানব পাচার একটি মারাত্মক অপরাধ, তা যেখানেই ঘটুক না কেন। এমন অপরাধ মানুষের মর্যাদার অধিকারকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অনেক সময় অপরাধী চক্র বিদেশে কর্মরত প্রবাসীদের টার্গেট করে। অন্য সময় পাচারকারীরা দেশের সীমান্তে জাল বিস্তার করে।’

‘যেখানে শ্রম দিতে বাধ্য করা হয় এবং পুরুষ, নারী বা শিশুকে শ্রম দ্বারা শোষণ করা হয়, এটিই মানব পাচার। কিছু মানুষ এ অপরাধকে আধুনিক দাসত্বও বলে থাকেন। আমরা এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত। চাকরির অভাব এবং অভিবাসনে
উচ্চ ব্যয়, এমন অনিয়মিত স্থানান্তরে ভূমিকা রাখে। তারা পাচারের শিকারও হন,’ যোগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, প্যালারমো প্রোটোকল হলো-তিনটি প্রোটোকল, যা ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইমের বিরুদ্ধে ২০০০ কনভেনশনকে পরিপূরক করতে জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছিল। এর মধ্যে মানব পাচার, বিশেষ করে নারী ও শিশু পাচার রোধ এবং আগ্নেয়াস্ত্র পাচার রোধের প্রোটকল অন্যতম।

এ সম্পর্কিত আরও খবর