জরিমানা গুণতে হবে ডিএনসিসিকে

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-18 19:57:28

বার বার চিঠি পেয়েও সদুত্তর না দেওয়ায় এবার বড় ধরনের জরিমানার শিকার হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।

পরিবেশ ছাড়পত্র না নিয়ে ডিএনসিসি আমিনবাজার পৌর বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশন করেছে। ওই এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী ও অন্যান্যরা। পরিদর্শন শেষে তাদের সুপারিশ ছিল, ওই এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পৌর বর্জ্য ডাম্পিং করা হচ্ছে। ফলে ভূ-পৃষ্ঠের এবং ভূ-গর্ভস্থ পানি দূষণ, নদী ও জলাশয় দূষণ, কৃষি জমি বিনষ্ট এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশের ওপর বর্জ্য ডাম্পিংয়ের ক্ষতিকর প্রভাব যাতে না পড়ে, সেজন্য ডিএনসিসি কী কী কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা চিঠি দিয়ে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছিল। ওই চিঠি দেওয়া হয়েছিল চলতি বছরের ২৪ মে। এরপর ২৬ জুন আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু ডিএনসিসির পক্ষ থেকে সঠিক জবাব না দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

বৈঠকে কমিটির সভাপতি পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহাম্মদকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আর কত দিন সময় দেবেন? একটা সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি এমন হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কি করবে? আপনি যত দ্রুত সম্ভব নোটিশ জারি করে সর্বোচ্চ জরিমানা করেন। মানুষ যেন বুঝতে পারে, পরিবেশ ছাড়পত্র ব্যবহার না করলে শাস্তি হয়।’

এ সময় পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, ‘সিটির এত বর্জ্য তারা কোথায় ফেলবে? কিছুটা সময় দেওয়া হোক। এর জবাবে সাবের হোসেন বলেন, ‘আপনার আইনে কী বলে? এ ধরনের অপরাধ করলে কী করতে পারবেন?’

জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘জরিমানা করা যেতে পারে, উচ্ছেদও করা যেতে পারে।’

পরে সর্বোচ্চ জরিমানা করার পরামর্শ দিয়ে আগামী বৈঠকে এর অগ্রগতি দেখতে চান কমিটির সভাপতি।

কমিটি আমিন বাজারের ডাম্পিং স্টেশনের সমস্যা নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে বন্ধ করার নোটিশ দেওয়াসহ সর্বোচ্চ জরিমানা আরোপের সুপারিশ করে।

এছাড়া গাড়ি আমদানি করার ক্ষেত্রে পরিবেশ দূষণের ওপর নির্ভর করে ট্যাক্স নির্ধারণ করার জন্য আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের মধ্যে একটা প্রস্তাবনা তৈরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এদিকে টেকসই জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রকল্পের (কেইস) খাত ভিত্তিক ব্যয়ের চিত্র অসম্পূর্ণ এবং ভুল হওয়ায় পরবর্তী বৈঠকে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুর নাহার, মো. মোজাম্মেল হোসেন, দীপংকর তালুকদার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, মো. রেজাউল করিম বাবলু এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশ নেন।

এছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিএফআইডিসির চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর