ফেরিঘাটে অ্যাম্বুলেন্স পারাপারে অগ্রাধিকারের সুপারিশ

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-26 18:28:54

ফেরিঘাটে অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়ি পারাপারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। আরও ছয় দফা সুপারিশ রয়েছে কমিটির প্রতিবেদনে।

ফেরিঘাটে তিন ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষায় থাকায় স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় করা তদন্ত প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে।

সাত দফা সুপারিশ বলা হয়েছে—
১. ঘাট থেকে ফেরি ছাড়া ও পৌঁছানোর সময় মাস্টারকে অবশ্যই স্থায়ী লগ বুক/রেজিস্ট্রারে সময় লিখে স্বাক্ষর করতে হবে।
২. ফেরি ঘাটে ভিড়িয়ে ফেরির র্যা ম্প উঠিয়ে কোন ব্যক্তি বিশেষের জন্য কোনক্রমে অপেক্ষা করা যাবে না।
৩. নীতিমালা অনুযায়ী ভিআইপি সুবিধা চেয়ে কেউ ফেরি পারাপার হতে চাইলে তাকে অবশ্যই তার সরকারি ভ্রমণ বিবরণী আগে থেকে ফেরি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হবে। তবে জরুরি প্রয়োজনে পূর্বে যোগাযোগ সাপেক্ষে ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ম শিথিল করা যেতে পারে।
৪. অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স/গাড়ি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ফেরিঘাটে পারাপারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. প্রত্যেক ঘাটে ও ফেরিতে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে গাড়ি ও ফেরি পারাপারের বিষয় পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৬. ফেরিঘাট ও ফেরিতে কর্মরত সবার নাম ট্যাগসহ নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করতে হবে।
৭.ফেরিঘাট ও ফেরিতে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল নম্বর প্রদর্শন করতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি এ সুপারিশ করেন তদন্ত প্রতিবেদনে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন—নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুস সাত্তার শেখ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব তোফায়েল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্ব) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন: ফেরির অপেক্ষায় তিতাসের মৃত্যু: সেই যুগ্ম সচিব নির্দোষ

সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়ায় চিহ্নিত তিনজন তিতাসের মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন না। যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডল ঘটনার জন্য দায়ী নন। যুগ্ম সচিব জানতেন না যে ফেরিঘাটে মুমূর্ষ রোগী আছে। তাকে দোষী করার মতো যুক্তিসঙ্গত কারণ পাওয়া যায়নি।

মাদারীপুর কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় গত ৩১ জুলাই অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলে তিতাসের পরিবারকে কেন ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

গত ২৫ জুলাই রাতে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটে অসুস্থ তিতাসকে নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স ফেরিতে ওঠে। কিন্তু এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডলের জন্য প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি আটকে রাখা হয়। ফেরি ছাড়ার পর মাঝ নদীতে অ্যাম্বুলেন্সেই তিতাসের মৃত্যু হয়। তিতাস ঘোষ নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর