ছেলের চোখ উৎপাটন, হাইকোর্টের শরণাপন্ন বাবা

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, খুলনা | 2023-09-01 07:40:11

খুলনায় পুলিশ কর্তৃক ছেলে চোখ উৎপাটন মামলার সুষ্ঠু বিচার পেতে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন বাবা। চোখ উৎপাটন হওয়া শাহজালালের বাবা জাকির হোসেন হাইকোর্টে রিট করেছেন। এ সংক্রান্ত আদেশ সম্পর্কে জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন আদালত।

শাহজালালের বাবা জাকির হোসেন বলেন, ‘আমার নিরাপরাধ ছেলের চোখ তুলে দিয়েছে পুলিশ। আসামিরা পুলিশ আর প্রভাবশালী। তাই খুলনার প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার পাইনি। যে কারণে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’

হাইকোর্টের রুলের আদেশ থেকে জানা যায়, ব্যবসায়ী শাহজালালের দুই চোখ উৎপাটন সংক্রান্ত চলমান মামলায় খুলনার সেশন জজ আদালতের ক্রিমিনাল রিভিশন এবং মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের আদেশ সম্পর্কে জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন। ২৮ আগস্ট রুলের কপি খুলনার জেলা প্রশাসক ও সিএমএম আদালত বরাবর পাঠানো হয়।

এর আগে মামলার বাদী শাহজালালের মা রেনু বেগমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৮ জুলাই এই রুল জারি করেন। বাদীর পক্ষে আদালতে আবেদনটি দাখিল করেন অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ মোল্লা।

রুলে সেশন জজ খুলনার ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরের ক্রিমিনাল রিভিশন নং-২০৭ এবং একই বছরের ৩০ এপ্রিল খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের আদেশ (কেস নং-৩০৯, খালিশপুর) সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে।

এর আগে, ২০০৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলি আদালতে শাহজালালের মা রেনু বেগমের দাখিলকৃত এজাহারে বলা হয়, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই তার ছেলে শাহজালাল মহানগরীর নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনির শ্বশুরবাড়ি থেকে রাত ৮টায় শিশুর দুধ কেনার জন্য বাসার পার্শ্ববর্তী দোকানে যান। এ সময় খালিশপুর থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসিম খানের নির্দেশে তাকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়।

পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে ওসি তাকে ছাড়ানোর জন্য দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি করা টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তারা শাহজালালকে পুলিশের গাড়িতে করে বাইরে নিয়ে যায়। পরদিন ১৯ জুলাই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তাকে দুটি চোখ উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা।

এ সময় শাহজালাল জানান, পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে গাড়িতে করে গোয়ালখালী হয়ে বিশ্ব রোডের (খুলনা বাইপাস সড়ক) নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তার হাত-পা চেপে ধরে এবং মুখের মধ্যে গামছা ঢুকিয়ে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দু’চোখ উপড়ে ফেলেছে।

এ ঘটনায় শাহজালালের মা রেনু বেগম বাদী হয়ে ১১ পুলিশ ও আনসার কর্মকর্তাসহ ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর