‘পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অসহযোগিতা করলেই পেনাল কোড’

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 17:24:17

চলমান পরিচ্ছন্নতা অভিযানে কেউ অসহযোগিতা করলেই পেনাল কোডে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা শুধু সরকারের কাজ না, জনগণেরও দায় আছে। নিজের ঘর যেমন পরিষ্কার রাখেন, তেমনি করে শহরটাকেও পরিষ্কার রাখতে হবে। পরিচ্ছন্নতা অভিযানে কেউ অসহযোগিতা করলে তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সোমবার (২৬ আগস্ট) ডিএনসিসি কর্তৃক পরিচালিত চিরুনি অভিযান পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড ও নূরজাহান রোডের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মেয়র। এ সময় মেয়র সাধারণ জনগণের পাশাপাশি সরকারি অফিস-আদালত, পুলিশ স্টেশন এবং স্কুল-কলেজের প্রধানদের প্রতি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের আঙিনা পরিষ্কার রাখার আহ্বান জানান।

মেয়র বলেন, ‘ডিএনসিসির পক্ষ থেকে মশা নিধনে ওষুধ প্রয়োগের পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তাই বাসস্থান ও কর্মস্থল পরিষ্কার না রাখলে জরিমানা ছাড়াও আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

‘আমরা বলেছি, সরকারি কাজে বাধা দিলে আমরা পেনাল কোডে যাব, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। তাই নগরবাসীকে বলছি, আমাদের বাধ্য করবেন না। ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা প্রতিদিন সকাল ৯টার মধ্যে শহর পরিচ্ছন্ন করে দেয়, কিন্তু দুঃখের বিষয়, দোকানের কর্মচারীরা সকাল ৯টায় দোকান পরিষ্কার করে রাস্তায় ও ফুটপাতে ময়লা ফেলতে শুরু করেন,’ যোগ করেন মেয়র।

নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার বাড়ির ময়লা আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে দিন, আমাদের ডাস্টবিনে ফেলুন, আমরা পরিষ্কার করে দেব। দয়া করে শহরটাকে নোংরা করবেন না। যার যার দায়িত্ব সবাইকে পালন করতে হবে। আমাদের সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব আছে, সেটা আমরা পালন করছি।’

তিনি দুই বাড়ির মাঝখানের ময়লা পরিষ্কারের জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, ‘ঘরের ময়লা কেন আমরা দুই বাড়ির মাঝখানে ফেলব? এ শহরটা আপনার আমার সবার। আমি অনুরোধ করব, যে ময়লাগুলো আছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলুন। প্রথমবার সিটি করপোরেশন করে দেবে। এরপর থেকে কিন্তু স্থানীয় জনগণ ও সোসাইটির উদ্যোগে পরিষ্কার করতে হবে।’

দুই ভবনের মাঝখানের ময়লার স্থায়ী সমাধানের জন্য এলাকা ভিত্তিক সমিতিগুলোর সঙ্গে বসারও আগ্রহ প্রকাশ করেন মেয়র আতিক। রোববারের অভিযানে ২৫২টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে বলেও জানান মেয়র।

জনগণের প্রতি বাড়ি ও বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

তিনি বলেন, ‘গতকাল ১০ হাজার বাড়িতে চিরুনি অভিযান আমাদের টার্গেট ছিল। আমরা নয় হাজার ৭০০টি বাড়িতে গিয়েছি। ২৫২টি বাড়িতে আমরা লার্ভা পেয়েছি।’

আগামী ২০ দিন এ অভিযান চলবে জানিয়ে উত্তরের মেয়র জানান, ১০ দিনের মধ্যে পুরনো ৩৬টি ওয়ার্ড এবং বাকি দিনগুলোতে নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে অভিযান চালাবেন তারা।

এদিকে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গুলশানের ‘এক্সিকিউটিভ ইন লিমিটেড’কে তিন লাখ টাকা এবং ‘মিরাকি রেস্টুরেন্ট’কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই অপরাধে অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর নাহিদ আহসান গুলশানের শান্তা প্রোপার্টিজকে এক লাখ টাকা, শাহজাদপুরে ‘অনওয়ার্ড প্রোপার্টিজ’কে ৫০ হাজার টাকা এবং শাহজাদপুরের একটি ব্যক্তিগত নির্মাণাধীন ভবনের মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ডিএনসিসির ‘চিরুনি অভিযান’ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর