রমেকে পেটে সুই রেখে সেলাই, প্রসূতিকে মারধর 

রংপুর, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর | 2023-08-23 15:17:07

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে এক প্রসূতিকে অস্ত্রোপচারের সময় পেটে সুই রেখেই সেলাই করে দিয়েছে এক নার্স ও আয়ারা। এরপর ব্যথ্যা হওয়ায় কারণ জানতে চাওয়ায় অপারেশন থিয়েটারে মারধরের শিকার হয়েছে রোগী নিজেই। গত দুই দিন ধরে হাসপাতালে যন্ত্রণায় ছটফট করার পর প্রসূতির এক্সরে রিপোর্টে সুই রেখে সেলাই করার প্রমাণ পেয়েছেন রোগীর স্বজনরা। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। 

জানা গেছে, রংপুর মহানগরী আদর্শপাড়া এলাকার অটোচালক তানজিদ হোসেনের স্ত্রী আফরোজা বেগমকে প্রসব ব্যথ্যা নিয়ে গত মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বৃধবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় নরমাল ডেলিভারির সময় সমস্যা হলে ছোট অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতককে বের করে চিকিৎসক। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে চিকিৎসক ছাড়াই নার্স ও আয়ারা ক্ষত স্থানে সুই রেখে সেলাই করে দেন। এরপর ব্যথ্যার কারণ জানতে চাইলে অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে থাপ্পড় মারেন কর্তব্যরত এক নার্স। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) চিকিৎসকদের পরামর্শে মেডিকেলের বাইরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্সরে করালে আফরোজার গোপনাঙ্গের ভেতর সুই পাওয়া যায়।

ভূক্তোভোগী প্রসূতির খালাশ্বাশুড়ি রনজিনা আক্তার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ‘অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) বাচ্চাকে বের করার সময় জরায়ুর নিচের অংশটুকো বেশি কেটে ফেলেন নার্স ও আয়ারা। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। ওটি থেকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে নেয়ার আগে ব্যথ্যায় ছটফট করলে নার্সদের জানানো হয়। ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীকে চড়-থাপ্পড়ও মারেন কর্তব্যরত নার্সরা।’

প্রসূতি আফরোজা বেগম বলেন, ‘জরায়ুতে কাটার সময় আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। আমি চিৎকার করেছি। তারা আমাকে দুইবার চড় থাপ্পড় মেরেছে। তারপর নার্স আয়ারা তিন চারবার সেলাই দিয়েছে আর খুলেছে।’

রোগীর আরেক স্বজন আরজিনা বেগম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমরা অনেকবার নার্স ও আয়াদের বলেছি, প্রসূতির ব্যথ্যা হচ্ছে। তারা গুরুত্ব দেননি। পরে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্সরে করালে সুই রাখার বিষয়টির প্রমাণ মেলে। সরকারি হাসপাতালে যদি এমন ঘটনা হয়, তবে আমরা কার কাছে যাবো। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের আমরা শাস্তি চাই।’

এব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহকারি রেজিস্টার মাধবী রাণীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি।

অন্যদিকে গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শারমিন সুলতানা লাকী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃত হয়েছে। আমরা রোগীর সুচিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর