বাসায় বাসায় এডিসের প্রজনন ক্ষেত্র

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-22 21:07:49

রাজধানীর অধিকাংশ বাসাই যেন এডিসের প্রজনন ক্ষেত্র। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংসে মাঠে নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মীরা।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) প্রতিটি বাসা, অফিস, থানা, হাসপাতাল পরিদর্শনের জন্য চিরুনি অভিযান চালু করেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

এই অভিযানে প্রতিটি ওয়ার্ডকে প্রথমে ১০ ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। পরে সেগুলোকে আবার ১০টি সাব ব্লকে ভাগ করে কাজ করছে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। এর মধ্য দিয়ে প্রতিটি বাসাই অভিযানের আওতায় আসছে। প্রথমে গুলশান-১ এলাকার ২০নং ওয়ার্ডের প্রতিটি ব্লকে পরিদর্শন করবে এই টিম। পুরো ওয়ার্ড শেষ করতে ১০ দিন সময় লাগবে।

প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তারা বাসায় বাসায় পরিদর্শন করছে। সঙ্গে তারা দুই ধরনের স্টিকার নিয়ে যাচ্ছে। একটা হচ্ছে ‘সাবধান’ এই বাসায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। আরেকটা স্টিকার হচ্ছে ‘তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন’।

যে বাসায় এডিসের লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে সেখানে- ‘সাবধান’ এই বাসায় এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে স্টিকারের পাশাপাশি একটি গোল সিল লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার প্রথম দিন ১ নং সাব ব্লকের ২৫০টি বাসার সবগুলো পরিদর্শন করেন ডিএনসিসির টিম।

পরিদর্শন শেষে দেখা গেছে ৩০-৪০ শতাংশ বাসায় এডিসের লার্ভার অস্তিত্ব রয়েছে। ওই সকল বাসায় স্টিকার লাগিয়ে আসার পাশাপাশি সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এবং লার্ভা ধ্বংস করে দিয়ে আসছেন তারা। এরপর আবার ১০ দিন পর সেই বাসায় যাবে টিমটি। তখনো যদি লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে ওই বাসার মালিকের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এতে ওই বাড়ির মালিকের জরিমানা বা কারাদণ্ড হতে পারে।

তবে বাসা বাড়ির বাইরে অফিস, থানা, হাসপাতাল বা সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে তাদের জরিমানা করা হচ্ছে।

চিরুনি অভিযানের ফলাফল সম্পর্কে ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মঞ্জুর হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘প্রথম দিনে আমরা ১ নং সাব ব্লকের ২৫০টি বাসা পরিদর্শন করেছি। তাতে দেখা গেছে ৩০-৪০ শতাংশ বাসাতেই এডিসের লার্ভার উপস্থিতি রয়েছে। আমাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। প্রথম দিন হওয়ায় মানুষের সাড়া কম থাকলেও আজ দ্বিতীয় দিনে এখন পর্যন্ত ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, গুলশান-১ এর ২ নং রোডের প্লট ৪/বি, ব্লক-এসডব্লিউ (এফ) ও একই রোডের ব্লক-এসডব্লিউ (এফ), প্লট ৩/এ বাসায় এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে বলে লাল সিল ও স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরের বাসায় লার্ভা না থাকায় সেখানে লাগানো রয়েছে তিন দিনে এক দিন জমা পানি ফেলে দিন লেখা স্টিকারটি।

এছাড়া গতকাল কর্মসূচির শুরুতে গুলশান-১ এর ১নং সড়কের ১নং বাড়িতে যান মেয়র। এ বাড়ির ছাদে কমোডের পরিত্যক্ত ফ্লাশে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ভবনের মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ১৪০নং সড়কের ১০নং নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ভবনের মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর