বাড়ির ‘নো-ম্যানস ল্যান্ড’ সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে না

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 19:54:12

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক এডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংসে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির আওতাভুক্ত প্রতিটি বাড়িতে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা যাবেন, সেখানে পরিষ্কার করে দিয়ে আসবেন এবং এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, 'আমরা দেখি দুই বাড়ির মাঝখানে নো-ম্যানস ল্যান্ডে কী অবস্থা। নো-ম্যানস ল্যান্ড সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে না।'

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ডিএনিসিসির ১৯ নং ওয়ার্ডে ডা. ফজলে রাব্বি পার্কে বিশেষ এই কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র এ কথা বলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, স্থানীয় কাউন্সিলর মফিজুর রহমান প্রমুখ।

মেয়র বলেন, 'এই চিরুনি অভিযান যদি করা যেতে পারে অবশ্যই টেকসই হবে। তবে টেকসই করার জন্য এলাকার জনগণকে সচেতন হতে হবে, সম্পৃক্ত হতে হবে। আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০ ভাগে ভাগ করে আবার সেটাকে ১০টি সাব ব্লক করে প্রতিটি বাসায় টিম পাঠাচ্ছি। তারা ঘুরে দেখে আসবে এবং পরিষ্কার করে দিয়ে আসবে। আর যে বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাবে সেই বাড়িতে স্টিকার লাগিয়ে দেব। এরপর ১০ দিন পর আবার সেই বাড়িতে যাবে, এরপর যদি সেখানে মশার লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে জরিমানা করতে বাধ্য হব। এছাড়া সরকারি বেসরকারি বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান, নির্মাণাধীন ভবনে এরইমধ্যে জরিমানা করা হচ্ছে।'

নগরবাসীর উদ্দেশে আতিকুল ইসলাম বলেন, 'আপনার বাসার সামনে যেমন পরিষ্কার থাকবে বাসার পেছনে পরিষ্কার থাকতে হবে। সিটি করপোরেশনের পক্ষে একা সম্ভব না। দুই বাড়ির মাঝখানে ও আঙিনায় যে 'নো-ম্যানস ল্যান্ড' এটিও সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে না। বাড়ির ১০ তলা ৯ তলা, ৮ তলা ছাদের উপরে, ব্যালকনিতে, বারান্দায় যত্রতত্র আবর্জনা রেখে দিচ্ছি। যেগুলো থেকে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে।'

মেয়র বলেন, 'আমাদের লোক যাবে আপনার বাসায়, প্রবেশ করতে দিন। আমাদের লোক গিয়ে পরিষ্কার করে দিয়ে আসবে। এরপর সর্তক করবে। অনুগ্রহ করে আপনাদের বাসায় ঢুকতে দিন।'

এরপর মেয়র পার্কের পাশেই একটি বাসার ছাদ পরিদর্শন করেন, সেখানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় বাড়ির মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বাড়ির প্রবেশ গেটে সাবধান লেখা স্টিকার ও লাল গোল সিল মেরে দেন মেয়র।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, 'ঢাকাতে ডেঙ্গু এই প্রথম নয়। ১৯৬৪ সালে ডেঙ্গু হয়েছিল বড় আকারে নয়, তখন শহর ছিল ছোট। তখন এই ডেঙ্গুকে বলা হত ঢাকা ফিবার। পরে ১৯৯৯ সালে বড় আকারে হল, এরপর ২০০০ সালে আরও বড় আকারে। তখন আমরা কিছু মানুষ- আমি, জুয়েল আইচ, মিতা হক, আতিউর রহমান সব বেরিয়ে পড়লাম। এক হাজার ছাত্র জোগাড় করে যে জায়গায় বেশি রোগী সেখানেই পরিষ্কার করতে শুরু করলাম, আমরা ছাড়ি নাই। ধীরে ধীরে সারাবছর একবার ঢাকা শহর পরিষ্কার করেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'ডেঙ্গুর কোনো চিকিৎসা নাই। ডেঙ্গু হলে ভাল হতেও পারে নাও পারে। কারো ডেঙ্গু হলে সে বাঁচবে কিনা বলতে পারবে না। এটাকে কেবল প্রতিরোধ করা যেতে পারে। ডেঙ্গুর জন্মস্থান নষ্ট করা যেতে পারে। আমরা যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হই নিজ বাড়ি আশপাশের জায়গাগুলো পরিষ্কার করে রাখি। তাহলেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা যাবে।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর