‘ভিক্ষা দেও, হামারোতো ঈদ আছে। সেমাই, চিনি আর গোস্ত কিনি খামো। আজ (ঈদের দিন) যদি দান খয়রাত না করেন, কোন দিন করবেন। বাড়ি যাওয়ার আগোত হামার এপাকে (এইদিকে) একনা (একটু) দ্যাকেন বাহে।’
রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আবেদ আলী।
পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের প্রধান জামাতে অংশ নিতে রংপুর কেন্দ্রীয় কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে সমবেত হয়েছিল হাজার হাজার মুসল্লি। তাদের কাছে ভিক্ষার আকুতি জানিয়ে কথাগুলো বলেন ওই ভিক্ষুক।
আবেদ আলী এক প্রতিবন্ধীকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে ভিক্ষা করতে এসেছেন। তার মতো আরও অনেকেই এই ঈদগাহে ভিক্ষা পাবার আশায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসব ভিক্ষুকদের মধ্যে নারী-পুরুষসহ ছোট শিশু ও প্রতিবন্ধীরাও ছিল।
ঈদের দিন সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকেই ঈদগাহের দু’পাশে জড়ো হন তারা।
জহুরা বানু নামে এক নারী ভিক্ষুক বলেন, ‘জোর করি তো দান খয়রাত নেওয়া যায় না। কেউ দান করে না, আবার কেউ দান করি চলি যায়। যামরাগুল্যা (যারা) দান করবে তামার (তারা) সওয়াব হইবে।’
ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে আসা প্রায় ২৫ হাজার মানুষের মধ্য থেকে এক-দেড় হাজার মানুষও দান করেন না বলে অভিযোগ আরেক ভিক্ষুক গোসা মামুদের। তিনি বলেন, ‘অভাব দুঃখ আছে দেকি তো ভিক্কা করি খাই।’
কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানের মতো রংপুর মহানগরীর বেশির ভাগ ঈদগাহ ও মসজিদের সামনে ঈদসহ জুমার নামাজ ও শবে বরাতের দিন ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়ে যায়। রংপুরে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ ও উদ্যোগ না থাকায় দিন দিন বিভাগীয় এ নগরীতে বেড়ে চলেছে ভিক্ষাবৃত্তি।