রাজধানী পান্থপথের হোটেল ওলিও’তে সন্ত্রাসী হামলার মামলায় ১৫ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) বিভাগ। এর মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সম্পৃক্ত থাকার অভিযুক্তরা হলেন, আকরাম হোসেন খান নিলয়, তানভীর ইয়াসীন কবির, আবু তুরাব খান, সাদিয়া হোসনা লাকি, হুমায়রা জাকির নাবিলা, তাজরীন খানম শুভ, আব্দুল্লাহ আয়চান কবিরাজ, আবুল কাশেম ফকির, লুলু সরদার ওরফে শহিদ মিস্ত্রি, তাজুল ইসলাম ছোটন, নাজমুল হাসান মামুন, নব মুসলিম আব্দুল্লাহ, কামরুল ইসলাম শাকিল, তারেক মো. আদনান ও সাইফুল ইসলাম।
ঘটনার দুই বছর পর তদন্ত শেষে রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
মনিরুল ইসলাম বলেন, 'হামলাকারী সকলেই নব্য জেএমবির সক্রিয় সদস্য। এদের মধ্যে হামলার শুরুতেই আত্মঘাতী হয়ে মারা গেছেন বোমা হামলাকারী সাইফুল ইসলাম। সাইফুল নিহত হওয়ায় বাকি ১৪ জনের নামে আমাদের অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার ১৪ জনের মধ্যে ১০ জন ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তাদের কৃতকর্মের দায়দায়িত্ব ও প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে বর্ণিত আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে অভিযোগপত্র দাখিলের নিমিত্তে সরকারের পূর্বানুমোদনের জন্য পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ১৫ জনের মধ্যে ১৪ জনকেই গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ। ঘটনাস্থলে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হয় বোমা বহনকারী সাইফুল। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মাস্টারমাইন্ড আকরাম হোসেন খান নিলয়, অর্থ সরবরাহকারী তানভীর ইয়াসীন কবির, আবু তুরাব খান, সাদিয়া হোসনা লাকি, হুমায়রা জাকির নাবিলা ও তাজরীন খানম শুভ। ওই ঘটনায় বোমা সরঞ্জাম সরবরাহ করে আবুল কাশেম ফকির, লুলু সরদার ওরফে শহিদ মিস্ত্রি, তাজুল ইসলাম ছোটন।'
তিনি আরও বলেন, 'ঢাকার একটি আস্তানায় বোমা প্রস্তুত করে নাজমুল হাসান মামুন। আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ছিলেন সাইফুল ইসলাম। ওই ঘটনায় আশ্রয়দাতা ও সহায়তাকারী নব মুসলিম আব্দুল্লাহ, কামরুল ইসলাম শাকিল, তারেক মো. আদনান ও আব্দুল্লাহ আয়চান কবিরাজ।'
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের অদূরে শুক্রাবাদের পান্থপথে অবস্থিত হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের পুরনো ভবনে জঙ্গিরা আশ্রয় নেওয়া খবরে অভিযান চালায় সিটিটিসিসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
ওই অভিযানে সাইফুল নামে এক জঙ্গি আত্মঘাতী হামলায় মারা যায়। ঘটনার পর সিটিটিসি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, তার কাছে যে বোমা ছিল তা নিয়ে ওইদিন ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি সংগঠনের একাংশ কথিত নব্য জেএমবি’র।