খুলনা জিআরপি থানায় গণধর্ষণ: ওসি-এসআই প্রত্যাহার

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 07:45:23

খুলনার জিআরপি থানায় এক নারীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি পাঠান ও উপ পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হককে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে।

বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে তদন্ত কমিটির প্রধান কুষ্টিয়া সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'এখন পর্যন্ত তদন্ত কমিটির কাছে আদালতের কোনো নির্দেশনা আসেনি। ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমরা কথা বলতে পারিনি। অভিযোগের পরিপ্র‌েক্ষিতে খুলনা জিআরপি থানার ওসি ওসমান গণি পাঠান ও এসআই নাজমুল হককে ক্লোজড করা হয়েছে।'

এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) কুষ্টিয়া সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদসহ তিন সদস্য‌ের তদন্ত কমিটি তদন্ত কাজ শুরু করে। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- পুলিশ পরিদর্শক শ ম কামাল হোসেইন ও মো. বাহারুল ইসলাম।

ঘটনার সূত্র‌ে জানা যায়, খুলনা জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য তিন সন্তানের জননীকে থানায় আটকে রেখে গণধর্ষণ করেছে বলে আদালতে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন ওই নারী। খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই নারী এ অভিযোগ করেন। ঘটনা তদন্তে পাকশী রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সোমবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া আদালতের নির্দেশে সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ওই নারীর বাড়ি নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকায়। তিনি তিন সন্তানের জননী। তার স্বামীর বাড়ি সিলেটে।

নারীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার বিকালে ওই নারী যশোরে ডাক্তার দেখাতে যান। এরপর তিনি খুলনায় আসার জন্য বেনাপোল থেকে খুলনাগামী কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনটি ফুলতলা এলাকায় পৌঁছালে ট্রেনে থাকা জিআরপি পুলিশ মোবাইল চুরি করার অভিযোগ তুলে তাকে আটক করে। এরপর ট্রেন থেকে নামিয়ে তাকে খুলনা জিআরপি থানায় নিয়ে যায়।

পরিবারের সদস্যরা জানান, খবর পেয়ে তারা থানায় গেলে জিআরপি থানার ওসি উসমান গণি এক লাখ টাকা দিলে তাদের বোনকে ছেড়ে দেবে বলে জানান। কিন্তু তারা টাকা দিতে না পেরে বাড়ি চলে যান। সকালে থানায় গেলে কাঁদতে কাঁদতে তার বোন জানায়, রাতে থানা হাজতে ওসি তাকে ধর্ষণ করেছে। ওসি ধর্ষণ করে চলে যাওয়ার পর পর্যায়ক্রমে আরও চার পুলিশ সদস্য তাকে ধর্ষণ করেন।

তারা আরও অভিযোগ করেন, শনিবার সকালে তার বোনকে পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার করা হয়েছে দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। ধর্ষণের আগে তার বোনকে পুলিশ সদস্যরা মারধরও করে।

আরও পড়ুন: খুলনায় জিআরপি থানায় গণধর্ষণ: মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন

আরও পড়ুন: আদালতে দাঁড়িয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ

এ সম্পর্কিত আরও খবর