ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে নারী সংহতির মানববন্ধন

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 19:50:29

রাজধানীর ওয়ারীতে ৭ বছরের শিশু সায়েমাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে, ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে এবং সারা দেশে নারী-শিশু ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদী সমাবেশ করেছে নারী সংহতি-মিরপুর অঞ্চল।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে মিরপুর ১২ নম্বরের প্রিন্স প্লাজার সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারী সংহতি-মিরপুর অঞ্চলের আহ্বায়ক মুন্নী মৃ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন মিরপুর অঞ্চলের সদস্য জেরিন সেতু। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কানিজ ফাতেমা ও সুলেখা রহমান এবং মিরপুর অঞ্চলের সংগঠক লুৎফুন্নাহার সুমনা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি ওয়ারিতে ৭ বছরের শিশু সায়মাকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। অব্যাহতভাবে দেশে একের পর এক নারী ও শিশুদের ওপর নৃশংস নিপীড়ন-ধর্ষণ-যৌননিপীড়ন-হত্যার ঘটনা ঘটে চলছে। গত ৬ মাসে ২০৮৩ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আগে সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে সাধারণত ক্ষমতাসীনেরা যুক্ত থাকলেও এখন ক্ষমতাহীন ব্যক্তিদেরও এসব ঘটনা ঘটাতে দেখা যাচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিত্যনতুন সহিংসতার জন্ম দিচ্ছে। দেশে নিরাপত্তাহীনতা এমন অবস্থায় গেছে যে, কে কখন, কোথায় সহিংসতার শিকার হবে তা আগে থেকে কেউ বলতে পারে না।

বক্তারা বলেন, পুরুষেরা নারীর শত্রু নয়। কিন্তু যে পুরুষ নারী-শিশুদের ধর্ষণ-নিপীড়ন করে, হত্যা করে সে কারও বন্ধু হতে পারে না। একটি ছেলেশিশু শৈশব থেকেই পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে, মিডিয়ায়, চলচ্চিত্রে এবং সংস্কৃতিতে নারীকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে চিনতে শেখে, দেখে তখন বড় হয়ে সে ধর্ষক হয়ে ওঠে। যে সমাজ-সংস্কৃতি ধর্ষক, নিপীড়ক, অমানুষ তৈরি করে, তাদের মানসিকতা বদলের জন্য রাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। সায়মার ধর্ষক হারুনকে আমরা রাতারাতি গ্রেপ্তার হতে দেখেছি। হয়তো তার বিচার হবে, শাস্তিও হবে। তবে কেবল শাস্তি নিশ্চিত হলেই ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন বন্ধ হবে না। সমাজ নারীদের পুরুষের সামনে ভোগ্যপণ্য হিসেবে হাজির করেছে। এ কারণে একজন নিপীড়ক পুরুষ মনে করে সে যা খুশি তা ই করতে পারে। পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতার বলেই পুরুষ ধর্ষণের মতো অপরাধ করে।

বক্তারা আরও বলেন, একটা দেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার বলে কিছু না থাকলে ধর্ষণের মতো অপরাধ বেড়ে যায়। আমরা এমন রাষ্ট্রে বাস করছি যেখানে নাগরিক হিসেবে নারীর পূর্ণ অধিকার নাই, সম্পত্তিতে সমানাধিকার নাই, অভিভাবকত্বে সমানাধিকার নাই, রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা নাই। ঘরে থেকেও শিশু-নারীরা আজ নিরাপদ নয়।

তারা বলেন, আমাদের ফেনীর নুসরাতে কাছ থেকে সাহস নিতে হবে, শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে হবে। দেশের এই অনিরাপদ অবস্থাকে প্রশ্ন করতে হবে এবং এ থেকে মুক্তি পেতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ লড়াই ছাড়া এই দুঃশাসন থেকে বের হওয়ার আর কোনো পথ নেই। নারী-শিশুর জন্য, সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ এবং মর্যাদা সম্পন্ন সমাজ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বিচারহীনতা, ধর্ষণ-যৌন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে পাড়ায়-মহল্লায়-প্রতিষ্ঠানে প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার আহ্বান জানায় নারী সংহতি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর