তানোরে মিটার না দেখে ঘরে বসে বিল তৈরি করে রিডাররা!

রাজশাহী, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী | 2023-08-27 09:04:30

 

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় বিদ্যুতের বিল প্রস্তুতকারীরা (মিটার রিডার) মিটার না দেখে নিজের বাড়িতে বসে বিল তৈরি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মিটার রিডারদের ফাঁকিবাজির কারণে ভৌতিক বিল গুণতে হচ্ছে গ্রাহকদের। মাসের পর মাস গ্রাহকেরা হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

গ্রাহকদের কাছে সরবরাহকৃত বিলের সঙ্গে মিটার ওঠা ইউনিটের সামঞ্জস্যতা না থাকায় নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) বারবার অভিযোগ দিয়েও সুরাহা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। গ্রাহকদের ওপর বাড়তি বিল চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে তানোরের নেসকো কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভৌতিক বিল আসায় বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ভিড় করে আছেন। তারা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সুরাহা না পেয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে লিপ্ত হচ্ছেন। প্রায় প্রত্যেকের হাতে বাড়তি বিলের কপি।

পৌর শহরের চাপড়াবাজার এলাকার মোসলেম উদ্দীন নামে এক গ্রাহক জানান, জুন মাসে যে বিলের কপি তিনি পেয়েছেন তাতে তার বাড়ির মিটারের ওঠা ইউনিটের চেয়ে ১০৫ ইউনিট বেশি লেখা হয়েছে। তাঁদের এলাকায় বিল প্রস্তুতকারী পারভেজ গ্রাহকদের বাসায় যান না। নিজ বাসায় বসেই আগের কয়েক মাসের বিলের গড় দেখে বিল তৈরি করে থাকেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

থানা সদরের গ্রাহক ও থানা মোড় বণিক সমিতির সভাপতি হামিদুর চৌধুরী বলেন, আমার বাড়িতে কেউ মিটার রিড করতে যায় না। মাস শেষে যে বিলের কাগজ সরবরাহ করা হয়, তাতে প্রায়ই অসমঞ্জস্যতা দেখি। তবে এবার তা বেশি দেখা গেছে। ১১৬ ইউনিট বেশি লেখা হয়েছে। বিল প্রস্তুতকারী শান্টু মিটারের কাছে না এসে বাসায় বসে সেই পুরোনো মিটারের গড় বিল ইউনিট করেই বিল তৈরি করে বলে শুনেছি।

নেসকো সূত্র জানায়, তানোর উপজেলার আবাসিক ও অনাবাসিক গ্রাহকের মিটারে ব্যবহৃত বিল বিতরণের জন্য দৈনিক ভাতার ভিত্তিতে ৬ জন কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন। তাদের দায়িত্ব প্রত্যেকটি মিটারের কাছে গিয়ে ইউনিট হিসেব করে বিল তৈরি করা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই জন মিটার রিডার বলেন, প্রত্যেক মাসে এক হাজার মিটার থেকে তাদের রিডিং নেওয়ার কথা। সেইগুলোর বিল তৈরি তাদের দায়িত্ব। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে তাদেরকে অতিরিক্ত মিটার রিডিংয়ের দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে ঘরে বসে বিগত কয়েক মাসের গড় দেখে বিল তৈরি করে থাকেন।

জানতে চাইলে তানোর নেসকো কার্যালয়ের আবাসিক প্রকৌশলী আবু সাঈদ হেলালী অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্ত মিটার রিডারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যেসব গ্রাহক বাড়তি বিল জমা দিয়েছেন সেগুলো ফেরত দেওয়ার নিয়ম নেই। তবে পরবর্তী মাস থেকে বিল কমিয়ে বা বাড়িয়ে প্রকৃত মিটার ইউনিট সমন্বয় করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর