সৎ মায়ের বিষের কাঁটা ছিল শিশু মাহা!

সিলেট, জাতীয়

আবু বকর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, সিলেট | 2023-08-28 04:23:33

‘আমার আগের স্ত্রীর দুটি সন্তান মারিয়া (৯) ও মাহা (৫)। জেনে বুঝে আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয় সালমা। কিন্ত বিয়ের পর থেকেই সে আমার ছোট মাসুম বাচ্চাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে। আমার আদরের সন্তানরা ছিল তার কাছে বিষের কাটা। মাহাকে নদীতে ফেলে হত্যা করে তার মনের খায়েস পূরণ করল।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে কথাগুলো বলছিলেন নিহত শিশু মাহার বাবা জিয়াউল হক। গত শুক্রবার (৫ জুলাই) সিলেটের সদর উপজেলার তেমুখি ব্রিজের উপর থেকে সুরমা নদীতে ফেলে পাঁচ বছরের শিশু কন্যা মাহাকে হত্যা করেন সৎ মা সালমা বেগম। সালমা ফতেহপুর এলাকার জিয়াউল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী।

জিয়াউল হক জানান, ১০ বছর আগে বিয়ে করেন সদর উপজেলার আটখলা রাজার গাঁও এলাকার রাজনা বেগমকে। তার সংসারে মারিয়া ও মাহার জন্ম হয়। প্রায় তিন বছর আগে তাকে তালাক দেন জিয়াউল। এর পর ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন মিরেরগাও তুতা মিয়ার মেয়ে সালমা বেগমকে।

 

তিনি বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে সালমা সব সময় আমার মা সামসুন নাহারকে মারধর করত। এর মধ্যে তার ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তারপর থেকে সে সৎ মেয়েদেরকেও মারধর করত। অনেক সময় সালমা আমাকে বলত সৎ মেয়ে দুটিকে গভীর রাতে কোনো এক জায়গায় ফেলে আসতে। আমি তার এসব কথাকে কখনো গুরুত্ব দেইনি। এভাবে চলতে থাকে আমাদের সংসার।’

আরও পড়ুন: ৫ বছরের শিশুকে নদীতে ফেলে দিলেন সৎ মা!

জিয়াউল বলেন, ‘আমি দিন মজুর মানুষ। একদিন কাজে না গেলে বউ বাচ্চা না খেয়ে থাকতে হয়। তাই প্রতিদিনের মতো বৃস্পতিবার সকালে কাজের খোঁজে বের হই। আমি বাড়িতে না থাকা অবস্থায় রাতে আমার মাকে খুব মারধর করে সালমা। শুক্রবার সকালে আমি বাড়ি ফিরলে শুনতে পাই সে ঘটনা। তখন সালমাকে কিছু না বলে আমি শশুর বাড়িতে যাই সালমার বিষয়ে অবগত করতে। সে আমার পেছনে পেছনে ঘরের কাউকে কিছু না বলে আমার ছোট মেয়ে মাহাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তখন সে মাহাকে তেমুখি ব্রিজ থেকে সুরমা নদীতে ফেলে দেয়।’

এ ঘটনায় সালমা বেগমের বিরুদ্ধে জালালাবাদ থানায় মামলা করেছেন বলেও জানান জিয়াউল হক।

আরও পড়ুন: ভেসে উঠেছে সৎ মায়ের ফেলে দেওয়া সেই শিশুর মরদেহ

এদিকে, রোববার (৭ জুলাই) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মাহার মরদেহ তার বাবা জিয়াউল হকের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। মাহার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গেলে এক নজর মুখ দেখতে তার বাড়িতে ভিড় করেন এলাকার লোকজন। বাদ আসর তার দাপন সম্পন্ন হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর