তিন মাস আগে পরিকল্পনা শাহীন-আরজিনার

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ১ | 2023-08-20 12:01:22

রাজধানীর বাড্ডায় বাবা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় লোমহর্ষক তথ্য পেয়েছে পুলিশ। আরজিনা ও তার প্রেমিক নিজেদের পথের কাঁটা সরাতে তিন মাস আগেই জামিল শেখকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তবে পরিকল্পনায় মেয়ে নুসরাতকে হত্যা করার কথা ছিল না। পিতাকে হত্যার ঘটনা জেনে যাওয়ায় এক পর্যায়ে মেয়েকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আরজিনা এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাখাওয়াত হোসেন। গত ৪ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছিন আহসান চৌধুরীর আদালতে জবাবন দেন আরজিনা। এসআই সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১ নভেম্বর রাতের খাবারের সঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ মিলিয়ে জামিলকে খাওয়ান আরজিনা। খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন জামিল। ধূর্ত আরজিনাও ঘুমের ভান করে দরজার ছিটকিনি না লাগিয়েই স্বামী-সন্তানের পাশে শুয়ে থাকেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মধ্যরাতে শাহীন ও তার বন্ধু খোয়াজ আলী ঘরে ঢোকেন। শাহীন ঘুমন্ত জামিলের বুকে চেপে বসে মুখে বালিশ চাপা দেন আর আরজিনা শক্ত করে জামিলের হাত চেপে ধরেন। জামিল জেগে উঠে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু করলে খোয়াজ আলী পালিয়ে যায়। কিন্তু জামিল আবারো অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় শাহীন জামিলের মাথায় কাঠ দিয়ে সজোরে আঘাত করে। কাঠের উপুর্যুপরি আঘাতের শব্দে পাশেই ঘুমিয়ে থাকা নুসরাত জেগে উঠে ‘বাবাকে কেন মারছ তোমরা’ বলে চিৎকার শুরু করে। তখন শাহীন নুসরাতকে হত্যা করার কথা জানালে আরজিনা প্রথমে সম্মতি দেননি বলে পুলিশের কাছে দাবি করেন। ‘ও বেচে থাকলে ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে’ বলে শাহীন আরজিনাকে নুসরাত হত্যায় রাজি করায়। এরপর শাহীন প্রথমে নুসরাতের গলাটিপে ধরে এবং পরে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে। নৃশংস এই জোড়া খুনের পর শাহীন ও আরজিনা ছাদে গিয়ে গল্প ফাঁদার পরিকল্পনা করে। সিদ্ধান্ত হয়, ডাকাতরা জামিল ও তার মেয়েকে হত্যা করেছে বলে জানাবেন। এছাড়াও ডাকাতরা যাওয়ার সময় তাকে ধর্ষণ করেছে বলেও দাবি করবেন আরজিনা। আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করার পর আরজিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই হত্যার ঘটনায় বাড্ডা থানায় মামলা হলে পুলিশ আরজিনা, শাহীন ও শাহীনের স্ত্রী মাসুমা এবং শাহীনের বন্ধু খোয়াজ আলীকে গ্রেফতার করে। উল্লিখিত ৪ আসামি ৪ দিনের পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে। ঘটনা বিস্তারিত জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাখাওয়াত হোসেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর