জমি কেনায় কালোটাকা সাদার সুযোগ বাতিল

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 17:49:10

প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। জমি কেনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে। তবে কালো টাকায় শিল্প কারখানা ও ফ্ল্যাট কেনা যাবে। এছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে কালো টাকা বিনিয়োগ করলে ১০ শতাংশ কর দিলে এর উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করবে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে কালো টাকাসহ আরও কিছু বিষয়ে সংশোধনের সুপারিশ করেন। এসব বিষয়ে সংশোধনী এনে অর্থবিল-২০১৯ সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে সংসদে বাজেটের ওপর বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, নতুন বাজেট বাস্তবায়নের ফলে দেশের প্রত্যেক মানুষ উপকৃত হবেন। বাংলাদেশ যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি ডাবল ডিজিটে (১০%)  উন্নীত হবে, যা এখন আছে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।

গতকাল সংসদে অর্থমন্ত্রী উপস্থিত থাকলেও বাজেটের সংশোধনীর বিষয়ে একটি কথাও বলেননি। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনের প্রস্তাব করেন এবং তা পাস হয়।

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় মানুষের অপ্রত্যাশিত কিছু অর্থ আসে। কিন্তু এই অপ্রত্যাশিত অর্থটা কোনো কাজে লাগানো যায় না। তখন তাদের একটা সুযোগ দেওয়া হয়, তখন এই টাকাটা মূল ধারায় চলে আসে। এজন্য একটা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

পাস হওয়া অর্থ বিলে পুঁজিবাজারের সুবিধার্থে কয়েকটি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়েছে। গত ১৩ জুন বাজেট ঘোষণায় পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কোম্পানিগুলোকে ক্যাশ ডিভিডেন্ডে বা নগদ লভ্যাংশ উৎসাহিত করার জন্য স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল।

এসব বিবেচনা করে শর্ত সাপেক্ষে করহার ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে ব্যবসায়ী সমাজের কেউ কেউ আপত্তি জানিয়েছে। বিনিয়োগকারীও নগদ লভ্যাংশ প্রত্যাশা করে।  পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, কমপক্ষে তার সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। যদি কোম্পানি ঘোষিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে স্টক লভ্যাংশের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।

বাজেট ঘোষণায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভ থাকলে অতিরিক্ত রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, এ প্রস্তাবের আপত্তি করেছে কেউ কেউ। সেই প্রেক্ষাপটে এই ধারাটির আংশিক সংশোধন করা হয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি কোনো অর্থবছরে করপরবর্তী নিট লাভের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভে স্থানান্তর করতে পারবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। যারা এই শর্ত পালন করবে, তাদের ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আর যদি কোনো কোম্পানি শর্ত পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে এই সুবিধা পাবে না।

অর্থবছর ২০১৯-২০ এর জন্য ১৩ জুন পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এরপর সংসদে ২৭০ জন সদস্য এতে আলোচনায় অংশ নেন। অবশেষে সংসদে বিলটি পাস করা হয়েছে। যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। আজ রোববার (৩০ জুন) সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর