‘মৃত্যুঝুঁকি’ নিয়ে রেললাইনের পাশে মাছের বাজার

ঢাকা, জাতীয়

তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 03:52:19

রাজধানীর এফডিসির গেট থেকে কারওয়ানবাজারমুখী রাস্তার পাশেই বসে মাছের বাজার। প্রতিদিন ভোর থেকেই সকাল ১০টা পর্যন্ত এ বাজার সরগরম থাকে। তবে বাজারের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া রেললাইনের উভয় পাশে মাছের বাজার বসায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের ‘মৃত্যুঝুঁকি’ রয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, এফডিসি মোড়ের রেল ক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ১০৮ বার নামানো ও উঠানো হয়। কিন্তু মাছ ব্যবসায়ীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এই ক্রসিংয়ের দু’পাশে মাছ বিক্রি করেন। আর ক্রেতারাও বাধ্য হয়ে রেল লাইনের ওপরের বাজার করতে যান।

শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, এফডিসি সংলগ্ন রেল ক্রসিংয়ের দুই পাশে মাছের বাজার বসেছে। এদিকে, বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন অনুযায়ী, রেললাইনের দু’পাশে ১১ ফুট জায়গা খালি রাখতে হয়। কিন্তু এখানে সেটা মানা হয় না।

এখানের মাছ ব্যবসায়ী মো. মিজান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আমি এই রেল লাইনের পাশে ১৭ বছর ধরে ব্যবসা করছি। এখানে প্রতি মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি আছে। কারণ মাঝে মাঝে কোনদিক থেকে ট্রেন আসে সেটা বুঝা যায় না। তবে আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় ঝুঁকি জেনেও এখানেই ব্যবসা করতে হয়। কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট কোনো জায়গা দিলে আমরা সেখানে চলে যাবো।’

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ' রেল ক্রসিংয়ের পাশে বাজার থাকায় আমাদের অনেক সমস্যা হয়। এই বাজারের কারণে এখানের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বাসার কাছে হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েও অনেকে বাজার করতে আসেন। তাই এখান থেকে বাজার পুরোপুরি তুলে দেয়া উচিত।’

তেজগাঁও স্টেশনের স্টেশন মাস্টার এম এ আজিজ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'ঝুঁকি থাকায় ওই বাজারের পাশে দু’জন সিপাহী নিয়োগ করা হয়েছে। তবে ট্রেন আসলে যাতে কেউ লাইনের ওপর না থাকেন সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

বাজারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিপাহী সাইফুল্লাহ জানান, রেল লাইনের ওপর কোনো বাজার নেই। লাইনের দুই পাশে বাজার থাকলেও যাতে মানুষ লাইনের ওপর না আসে সেজন্য তারা কাজ করছে। তারপরও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বাজার করতে আসেন।

রেল ক্রসিংয়ের দায়িত্বে থাকা গেটম্যান মো. বাহার মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'প্রতিদিন ১০৮ বার ক্রসিংয়ের প্রতিবন্ধকতা বন্ধ করতে হয়। ২০১৪ সালে এই বাজারে রেল দুর্ঘটনায় ৪-৬ জন মারা যায়। এরপরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। তবে মানুষের সচেতন হওয়া উচিত।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর