এসএসসি পরীক্ষার দেওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ১৬ বছর

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-09-01 23:08:17

এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম বয়স পুনর্নির্ধারণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন থেকে বয়স ১৬ বছর হওয়ার আগে কোনো ছাত্র-ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় বসতে পারবে না। নতুন বয়সসীমা নির্ধারণের আগে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারত। গতকাল রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা নীতিমালা চূড়ান্তকরণ সংক্রান্ত কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বয়স পুনর্নির্ধারণ ছাড়াও সভায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি ফরমের দাম ২০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)’র বইয়ের বাইরের বই থেকে কোনো প্রশ্ন নিয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী যে শ্রেণিতে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দেবে তার পূর্ববর্তী শ্রেণির বই থেকে প্রশ্নপত্র তৈরি করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (মাধ্যমিক) সালমা জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ন্যূনতম বয়স ছয় বছর। এটা কড়াকড়িভাবে মেনে চলা হচ্ছে। এ হিসাবে একজন শিক্ষার্থীর দশম শ্রেণিতে বয়স দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ১৬ বছর। তাই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বয়সও ন্যূনতম ১৬ হতে হবে। ভর্তি ফরমের দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে যুগ্মসচিব বলেন, পরীক্ষা সংক্রান্ত খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বয়স সমন্বয়ের জন্য এখন শিক্ষা বোর্ডগুলোতে নির্দেশনা পাঠানো হবে। সভা সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের কর্মকর্তারা বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ফরমের দাম ২০০ থেকে আরও ৫০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ¦ দেখা দেয়। এর যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে একজন যুগ্মসচিব সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি দেখেন, অনেক স্কুলে ফরমের দাম ২০০ টাকার কম নেওয়া হয়। এরপর মন্ত্রণালয় ফরমের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার অভিযোগ, তথাকথিত নামকরা স্কুলগুলো অকারণে বেশি অর্থ আদায়ে তৎপর। ওইসব স্কুলের দোসর হয়ে মাউশির দু-একজন কর্মকর্তা ফরমের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। তবে মাঠ পরির্দশনে এর কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) সুপারিশে ভর্তি ফরমের দাম ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৭০ টাকা করা হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি উভয় ধরনের উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তির আয়োজন করা হবে। ৬ষ্ঠ ও ৯ম শ্রেণিতে যথাক্রমে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষার ফল অনুযায়ী ভর্তি করতে হবে। অন্যসব ক্লাসে পরীক্ষা নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণিতে তিনটি বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। চতুর্থ, পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে শুধু বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য শুধু নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক থেকে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করতে হবে। এবারও ভর্তি পরীক্ষায় ক্যাচমেন্ট বা এলাকা কোটা থাকবে প্রতিটি স্কুলের ক্ষেত্রে। ঢাকার ৩৭টি সরকারি হাইস্কুল তিন ভাগে ভাগ করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। একজন শিক্ষার্থী একই ভাগের একাধিক স্কুলে আবেদন করতে পারবে না। তবে অন্য ভাগের স্কুলে আবেদন করতে পারবে। ভর্তিতে আগের মতো মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, এলাকা, শিক্ষা বিভাগের কোটা থাকবে। পাশাপাশি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শতাংশ আসন সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিভাবকের বদলির কারণে শিক্ষার্থীদের বদলি-ভর্তি ছয় মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবক বদলি হয়ে আসার ছয় মাস পর ভর্তির জন্য আবেদন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এদিকে, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত হলেও ফরম বিতরণ ও পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারিত হয়নি। মাউশিকে এটি চূড়ান্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সংস্থাটির উপপরিচালক (মাধ্যমিক) একেএম মোস্তফা কামাল বাংলাদেশের খবরকে জানান, সভার কার্যবিবরণী পাওয়ার পর ফের বৈঠক করে পরীক্ষা সংক্রান্ত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর