মেঘনার ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে যাত্রী পারাপার

, জাতীয়

মোকাম্মেল মিশু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ভোলা | 2023-08-26 21:33:10

সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভোলায় মেঘনা নদীর ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে যাত্রী পারাপার করছেন নৌযান মালিকরা। তবে অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন নিশ্চুপ থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন নৌযান মালিকরা।

জানা গেছে, প্রতি বছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভোলার মেঘনার ইলিশা থেকে চরফ্যাশনের কচ্ছপিয়া এবং লক্ষীপুরের মজুচৌধুরীর হাট ও নোয়াখালীর হাতিয়া পর্যন্ত অঞ্চলকে ডেঞ্জার জোন বা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এ সময় সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া যেকোনো নৌযান চলাচল বেআইনি। কিন্তু সরকারের ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিদিন অসংখ্য নৌযান চলাচল করে এই রুটে। কারণ ভোলার মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল ও মনপুরা উপজেলাসহ দুর্গম ইউনিয়ন, লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী-পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এসব নৌ-যান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দু’একটি রুটে সি-ট্রাক বা সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়া লঞ্চ থাকলেও অধিকাংশ রুটে ফিটনেসবিহীন লঞ্চ ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচল করছে। বিশেষ করে ভোলার তুলাতুলি থেকে মাঝের চর ও মজুচৌধুরীর হাট, দৌলতখান-মির্জাকালু থেকে চর জহিরুদ্দিন ও লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার-রামগতি, তজুমদ্দিন ও চরফ্যাশন থেকে মনপুরা এবং মুজিবনগর, কুকরী-মুকরী, ঢালচর, পটুয়াখালীর বাউফলসহ বিভিন্ন চরাঞ্চল ও উপ-দ্বীপের বাসিন্দারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে চলাচল করছেন।

অভিযোগ আছে, ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে চলাচল করায় প্রতিনিয়তই দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রীরা। এমনকি ট্রলারে উঠতে গিয়ে নারী ও শিশুরা আহত হয়। তবে মালিক পক্ষের দাবি, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয় যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করেন।

যাত্রী ইলিয়াস বেপারি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমাকে প্রায়ই নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরে যেতে হয়। উপায় না পেয়ে এসব নৌযানেই যেতে হয়। তবে ট্রলারে চলাচলকালীন ঝড়ের কবলে পড়লে অনেক ভয় লাগে।’

যাত্রী কামরুল মাস্টার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমাদের বাড়ি নদীর ওই পাড়। নদীতে রুলিং হইলে, ঝড়-তুফান হলে আমরা যাতায়াত করতে পারি না, খুব কষ্ট হয়। জানমালের নিরাপত্তা থাকে না। তবুও জীবন বাজি রেখে নদী পারাপার হওয়া লাগে।’
নৌকার মাঝি মানিক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বেআইনি হলেও পেটের দায়ে আমরা ট্রলার চালাই।’

ট্রলার মালিক মো. জামাল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘লঞ্চ-ফেরি না থাকলেই আমরা ট্রলারে যাত্রী পার করি। কারণ অনেক দূর থেকে বিভিন্ন অফিসাররা আসেন। তারা অনুরোধ করলে ২০/২৫ জনকে নিয়ে আমরা ট্রলার পার করি।’

ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নৌযান চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও নেওয়া হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর