শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে খুলনার ঈদ বাজার

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 18:41:12

ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি। রোজার শেষে এ মূহুর্তে জমে উঠেছে খুলনার ঈদ বাজার। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে খুলনা বিপণি বিতান ও মার্কেট এলাকা। ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় হওয়ায় দম ফেলার ফুসরত নেই বিক্রেতাদের।

সোমবার (৩ মে) খুলনা নগরীর নিউ মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, জলিল মার্কেট, হকার্স মার্কেট, শিববাড়ী মোড়ের শোরুম, সোনাডাঙ্গার শো রুম, ডাকবাংলা মোড়, রেলওয়ে মার্কেট, পিকচার প্যালেস মোড়, বড় বাজার, মশিউর রহমান মার্কেট, কবি কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, দরবেশ চেম্বার, নান্নু সুপার মার্কেট, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেট, হাজী মালেক চেম্বার, নূর চেম্বার, এশা চেম্বার, আড়ং, অঞ্জনস ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি মার্কেট এলাকা ও বিপণি বিতানগুলোতে ঈদের আমেজ বইছে। সব ধরনের ক্রেতা সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠেছে দোকানপাট। শেষ মূহুর্তে বেচাকেনায় যেন ধুম পড়েছে।

ঈদ বাজারে মানুষের ঢল, ছবি: বার্তা২৪

 

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকেই প্রচণ্ড গরম আর রোদ উপেক্ষা করে মার্কেটমুখী ক্রেতাদের চাপ বাড়তে থাকে। ঈদ কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের চাপে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দুপুরের পর থেকে প্রায় প্রতিটি মার্কেট ও বিপণি বিতান এলাকায় ক্রেতা বাড়তে থাকায় পা ফেলার স্থান নেই।

নগরীর শপিং কমপ্লেক্সের লেটেস্ট কর্নারের স্বত্বাধিকারী লিমন শেখ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ততই ক্রেতাদের চাপ বাড়ছে। এ বছর রোজার প্রথম দিকে বিক্রি ভাল না হলেও শেষের এ সময়টায় আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি ঈদের আগে চাঁদ রাতের কেনাবেচায় লাভ হবে অনেক।’

শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত খুলনা নগরবাসী, ছবি: বার্তা২৪

 

ব্যবসায়ী এসারত হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ক্রেতাদের চাপ বেড়েছে অনেক। প্রচণ্ড গরম আবার গতকালের বৃষ্টির জন্য অনেকে কেনাকাটা করতে পারেননি। যে কারণে আজ ক্রেতা সমাগম বেশি। এখন যারা আসছেন তারা খালি হাতে ফিরছেন না, কেনাকাটা করতেই আসছেন।

পিকচার প্যালেসের এ্যাপেক্স গ্যালারির ম্যানেজার সুজন ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এবারের ঈদ বাজার শুরু থেকেই কলকাতামুখী হওয়ায় বিক্রি হওয়ায় চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু শেষ দিকে এসে বেশ বিক্রি বেড়েছে। এখনও তো চাঁদ রাত বাকি। আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাবে এ বিক্রিতে।’

ঈদে নতুন পাঞ্জাবির সঙ্গে টুপি না হলেই নয়, ছবি: বার্তা২৪

 

ক্রেতারা বলছেন, রোজার শেষে ছুটি পেয়ে কেনাকাটা করতে আসতে হয়েছে। মাসের শুরুতে বেতন বোনাসের পাওয়ার পরই অনেকে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন।

গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে আসা প্রভাষক রাজু আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রোজার শুরুতে কাজের চাপে ঈদের কেনাকাটা করতে পারিনি। ছুটি পেয়ে খুলনায় এসে কেনাকাটা করছি। মার্কেটে অনেক ভিড়, কিন্তু উপায় নেই। এখন কেনাকাটা না করলে আর সময় পাবনা।’

শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা করছেন নারীরা, ছবি: বার্তা২৪

 

নগরীর ডাকবাংলার ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করতে আসা ভ্যানচালক রওশন গাজী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রোজার সারা মাস ভ্যান চালায়ে যা কামাইসি, তাই দিয়া সবার জন্য কিনসি। আমার মা আর বৌ’র জন্য শাড়ি কিনসি। আমার জন্য লুঙ্গি কিনসি আর দুই বাচ্চার জামা কিনসি। আর তো সময় নাই, কাইল দিন বাদেই ঈদ।

ক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারে এজন্য খুলনায় কেএমপি’র পক্ষ থেকে বিশেষ সতর্কতা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি মার্কেটেই পর্যাপ্ত পুলিশ টহল দিচ্ছে।

জুতার দোকানে ছেলেদের ভিড়, ছবি: বার্তা২৪

 

মার্কেট এলাকায় টহল দেয়ার সময় কনস্টেবল আনারুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রতিটি বিপণি কেন্দ্রের আশপাশে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আশা করছি ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত ক্রেতারা কোনো সমস্যা ছাড়াই কেনাকাটা করতে পারবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর