ময়মনসিংহে জমজমাট ঈদ বাজারে বৃষ্টির হানা

ময়মনসিংহ, জাতীয়

উবায়দুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2023-08-09 21:59:37

ঈদুল ফিতরের আগে শেষ ছুটির দিনে স্ত্রী ও সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটায় বের হয়েছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত আহসান হাবিব। নিজেদের জন্য পছন্দসই জুতা কিনতে গিয়েছিলেন ময়মনসিংহের গাঙ্গিনারপাড় এলাকার একটি শো-রুমে। জুতা কেনার পাঠ চুকিয়ে তার গন্তব্য ছিল বিপণি বিতানে। কিন্তু এক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে তার স্বাভাবিক কেনাকাটায় ছন্দ পতন ঘটল। ফলে শুধুমাত্র জুতা কিনেই হতাশ মন নিয়ে বাড়ি ফিরতে হল তাকে।

যাওয়ার আগে আহসান হাবিব বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘চাকরিজীবীদের জন্য রাতেই ঈদের কেনাকাটার সময়। ছুটির দিন হওয়ায় এদিনই স্ত্রী-সন্তানের জন্য কেনাকাটার পর্ব শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বৃষ্টি বাগড়া বসালো। এখন আরেকদিন ছুটতে হবে মার্কেটে।’

কেবল আহসান হাবিবই নয়, তার মতো এমন ঘটনা ঘটেছে অন্যসব ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষজনেরও।

শুক্রবার (৩১ মে) রাত ১০টায় হঠাৎ শুরু হওয়া বৃষ্টি শেষ পর্যন্ত ভারী বর্ষণে রূপ নেওয়ায় কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষজন বিভিন্ন বিপণি বিতানে আটকা পড়েন। ফলে এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেট ঘুরে, দরদাম করে পছন্দের পোষাক কিনতে পারেননি তারা।

এদিকে রাতও গভীর হওয়ায় বাড়ি ফেরায় প্রতিযোগিতায় নামতে হল ক্রেতাদের। টানা এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ক্রেতারা যেমন আশাহত, তেমনি ব্যবসায়ীদেরও পড়েছে কপালে হাত।

অঝোরে বৃষ্টিতে যখন নগরীর বারী প্লাজা, পালিকাসহ বিভিন্ন শপিং সেন্টারের ক্রেতারা কার্যত অবরুদ্ধ, সেসময় ব্যবসায়ীদের মুখও ভারী। কেননা নতুন কোনো ক্রেতার দেখা নেই।

এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘রাতে কমপক্ষে আরও তিন ঘণ্টা বেচাকেনা হতো। কিন্তু এই বৃষ্টিই সব শেষ করে দিল।’

এদিকে বৃষ্টিতে বড় বড় বিপণি বিতানগুলোর ব্যবসায়ীদের চেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে ফুটপাত ব্যবসায়ীদের। ভারী বর্ষণে তাদের দোকানপাট গুটিয়ে নিতে হয়েছে। ঈদের আগের এই সময়টাতে বাড়তি আয়ের আশায় ছোট ব্যবসায়ীরা ফুটপাতে দোকান বসায়। কিন্তু বৃষ্টিতে কপালে হাত পড়েছে তাদের। অনেকের কাপড়ও ভিজে গেছে।

এক ফুটপাট ব্যবসায়ী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বৃষ্টির লেইজ্ঞা আমগর সর্বনাশ অইয়া গেল। আজকা মানুষ অনেক বেশি আইছিল। ভাবছি আরও ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার বেচাকেনা হইব। বৃষ্টির লেইজ্ঞা তা আর অইল না। মানুষজন যাইতাছেগা। আমগরও আইজক্যাই ব্যবসা শেষ।’

বৃষ্টি যে কেবল কেনাকাটাতেই বিঘ্ন ঘটিয়েছে বিষয়টি তেমন নয়। কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের ঘরে ফেরা নিয়ে ছিল বাড়তি ঝামেলা। এ বৃষ্টির কারণে নগরীতে একদিকে যেমন যানজটের সৃষ্টি হয়, তেমনি দেখা যায় পরিবহন সংকটেরও। এতে অনেকেই পায়ে হেঁটেই ঘরে ফিরতে শুরু করেন। আর যান সংকট হওয়ায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও সাধারণ রিকশাগুলোও বাড়তি ভাড়া হাঁকাতে শুরু করে।

মকবুল নামে এক রিকশাচালক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঈদের আগে মানুষজন ভাড়া এমনিই খুশি অইয়াই বেশি দেয়। আর এহন বৃষ্টির মইধ্যে আমরা তো একটু বেশি নিমুই।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর