রংপুরে ভারতীয় ও সুতি কাপড়ের কদর ঈদ বাজারে

রংপুর, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-08-25 04:23:12

রংপুরে ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে বিপণী বিতানগুলোতে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে উপচে পড়া ভিড়। সড়ক থেকে মার্কেট সবখানেই দিনরাত সমান তালে চলছে কেনাকাটা। সবার চোখে এখন পছন্দসই পোশাক কেনার প্রতিযোগিতা।

বিক্রেতারা বলছেন, এবার ভারতীয় কাপড়ের চাহিদা থাকলেও দেশি সুতি কাপড়ে কদর ক্রেতাদের।

এদিকে ক্রেতাদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে বিক্রেতারাও এনেছে নানান ডিজাইনের বাহারি সব পোশাক। নামে বেনামে দেশি-বিদেশী পোশাকের সমারোহে ক্রেতারাও খুঁজছেন একটু ভিন্নতা। তবে ঈদের আনন্দে তীব্র গরমের চিন্তায় বেশির ভাগ ক্রেতার চোখ দেশি ও সুতির তৈরি কাপড়ের পোশাকে।

রংপুর মহানগরীর ঈদ বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। এখানকার মার্কেট ও বিপণী বিতানগুলোতে ছোট বড় সব বয়সী মানুষের ভিড়ে এগিয়ে আছে তরুণ-তরুণী আর শিশুরা। ঈদ আনন্দের পূর্ণতা আনতে বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশুরা ঘুরছেন এক দোকান থেকে আরেক দোকানে।

রংপুর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কেনাকাটা করতে আসা মানুষরা সকাল ১০টার পর থেকে বাজারমুখী হচ্ছেন। তবে সন্ধ্যার পর থেকে রাত একটা দেড়টা পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্যণীয়।

সরেজমিনে জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, ছালেক মার্কেট, হনুমানতলা মার্কেট, জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি শপিং মল, শাহ্ জামাল মার্কেটসহ কৈলাশ রঞ্জন মোড় থেকে সিটি বাজারের বিপরীতে বসা ফুটপাতের দোকানগুলোর প্রতিটিতেই কমবেশি ভিড় দেখা যায়।

রংপুর বিভাগীয় নগরী হওয়াতে এখানকার মাকের্টগুলোতে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষরা প্রতিদিনই আসছেন। এতে করে ঈদ যতই নাগালে আসছে ততই রংপুরের ব্যবসায়ীদের ঈদ ব্যবসা হয়ে উঠছে জমজমাট।

মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ভারতীয় কাপড়ের চাহিদা থাকলেও ক্রেতারা দেশি কাপড়ের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। তবে দাম নিয়ে আপত্তি রয়েছে ক্রেতাদের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রেতাদের পছন্দ ও কাপড়ের মানের ওপরই দাম নির্ভর করছে। শিশুদের পোশাকের দাম বেশি বলেও জানান তারা।

এবার ছেলেদের জিন্স প্যান্ট, গ্যাভার্ডিন প্যান্টের পাশাপাশি কালার শার্ট, ফুলশার্ট, চেক শার্ট, এক কালার শার্ট রয়েছে পছন্দের তালিকায়। হরেক রকমের বর্ণালী পাঞ্জাবির চাহিদাও রয়েছে সর্বাধিক। আর টপ, স্কার্ট, ফ্রকও রয়েছে ছোটদের পছন্দের তালিকা।

ভারতীয় কাপড়ের কদর কমলেও দেশি সুতি কাপড়ের থ্রি-পিসের মতোই সমান তালে বিক্রি হচ্ছে ইন্ডিয়ান গাউন ও কাজ করা লং ফ্রোক। এছাড়াও জুতা, কসমেটিকস আর অলঙ্কারের দোকানগুলোতে রয়েছে ঈদের কেনাকাটার ভিড়।

জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের রাঙা পিড়ান স্বত্বাধিকারী মিন্টু বার্তা২৪.কমকে বলেন,‘ক্রেতার চাহিদা অনুসারে আমরা দেশি বিদেশি দুই ধরনের  পোশাকই বিক্রি করছি। সন্ধ্যার পর থেকে ক্রমেই ক্রেতা বাড়ছে। এর মধ্যে রংপুরের বাইরের ক্রেতা বেশি।’ পঁচিশ রমজানের পর থেকে আরও বিক্রি বাড়বে বলে জানান তিনি।

নগরীর রয়্যালিটি মেগা মলে বদরগঞ্জ থেকে কাপড় কিনতে আসা কলেজ পড়ুয়া মোকাররক হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রংপুরে এখন ভালো মানের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া আগের মত সবখানে ঘুরে ঘুরে কাপড়চোপড় কেনার ঝামেলাও নেই। একটা শপিং মলে ঢুকলেই সবকিছু পাওয়া যাচ্ছে। দামও খুব বেশি নয়।’

রয়্যালিটি মেগা মলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানবীর হোসেন আশরাফী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যারা বাজারমুখী হয়েছেন তাদের বেশির ভাগই রংপুরের বাইরের জেলার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে সবাই রংপুরে আসছেন। স্থানীয়রাও কেনাকাটা করছেন, তবে আর তিন চারদিন থেকে তাদের কেনাকাটা বাড়বে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর