সিলেটে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে আরিফ-ফয়সলের যুদ্ধ ঘোষণা

সিলেট, জাতীয়

নূর আহমদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট | 2023-08-11 05:34:19

আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র। নানা কারণে আলোচিত তিনি। ‘ভাঙ্গা গড়ার আরিফ’ হিসেবেও বেশ পরিচিত। এবার সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তিনি।

অবশ্য তার সঙ্গে একমত হয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. ফয়সল মাহমুদ ও অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জ্যোতির্ময় সরকার। রমজানের শুরু থেকে সিলেট শহরে যানজট নিয়ন্ত্রণে অনেকটা যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন মেয়রসহ পুলিশের এই কর্মকর্তারা।

বিগত কয়েক মাস আগে এসএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) হিসেবে যোগদান করেন মো. ফয়সল মাহমুদ। তার শৈশব কৈশোর ও তারুণ্যে স্মৃতি বিজড়িত শহর সিলেট। এই শহরেই ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্ব পাওয়ার পরই তিনি মনযোগী হয়ে ওঠেন যানজট নিয়ন্ত্রণে। নিজে রিকশা করে মাইক হাতে নিয়ে সাধারণ নাগরিককে সচেতন করার চেষ্টা চালান।

সম্প্রতি ফয়সল মাহমুদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আরেক অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জ্যোতির্ময় সরকার। তার বাড়িও সিলেটের সুনামগঞ্জে। বেড়ে ওঠা সিলেটেই। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ে ছাত্র জ্যোতির্ময় সরকারও দরদ দিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টায় মত্ত।

অন্যদিকে, এই সুযোগেইর যেন অপেক্ষায় ছিলেন বিগত সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত বহুল আলোচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এই কর্মকর্তাদের নিয়েই যানবাহন নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। রমজান মাস ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রতিদিনই অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে কাজ করছেন। মেয়রের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ফয়সল মাহমুদ ও জ্যোতির্ময় সরকার।

সিটি করপোরেশনের মেয়র ট্রাফিক বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার (১৫ মে) দিনভর নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এতে অন্তত চারটি মোটরসাইকেল, তিনটি বাইসাইকেল এবং ফুটপাত ও রাস্তার পাশের অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করে বিপুল পরিমাণ মালামাল ও আসবাবপত্র জব্দ করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ মে) নগরীর চৌহাট্টা থেকে হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজার গেইট পর্যন্ত রাস্তার পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ গাড়িস্ট্যান্ড অপসারণ করেন মেয়র ও ফয়সল মাহমুদ। বুধবার আবারও ওই এলাকায় গাড়ি রেখে স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হচ্ছে এমন সংবাদে পুনরায় অভিযান চালানো হয়।

একটা সময় যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশি অসহযোগিতার অভিযোগের অন্ত ছিল না আরিফের। অবশ্য এবার এসএমপির ট্রাফিক শাখা যানজট নিয়ন্ত্রণে তাকে সহযোগিতা করে চলছে।

এসএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. ফয়সল মাহমুদ মনে করেন, সিলেট আধ্যাত্মিক নগরী। এই নগরী আপনার আমার সবার। শহরটাকে সুন্দর ও যানজটমুক্ত করতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা চালাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘কোন পয়েন্টে কতটা গাড়ি, সড়কের কতটুকু জায়গা জুড়ে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারবেন, সব চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে অবশ্য পুলিশ অ্যাকশনে যাবে।’

সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মাইক্রোবাস চালকরা ঈদ পর্যন্ত সিভিল সার্জন অফিসের সামনে অল্প সংখ্যক মাইক্রোবাস রাখার অনুমতি চেয়েছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে ঈদ পর্যন্ত ওই এলাকায় মাত্র ১০টি মাইক্রোবাস ফুটপাতের উপর রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ঈদের পর সড়ক দখল করে স্ট্যান্ড গড়ে তুলতে দেওয়া হবে না বলে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর