মহানগর প্রভাতী ট্রেন থেকে: কমলাপুর রেলস্টেশন। বুধবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে প্লাটফর্মে দাঁড়ানো চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী। কিন্তু স্টেশনের স্কিনে ট্রেনটির ছাড়ার সময় দেখানো হলেও প্লাটফর্ম দেখাচ্ছিল না।
সোয়া ৭টায় প্রথমে মাইকিং করা হলো, তারপর স্কিনে প্লাটফর্ম নম্বর উঠলো। কিন্তু সকাল থেকেই লোকজন এসে ট্রেনটির তালাশ করতে গিয়ে হয়রান হচ্ছিলেন। এতে যাত্রীরা যেমন পেরেশান হচ্ছিলেন, তেমনি বারবার একই ধরনের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে রেলওয়ের লোকজনের চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট।
অথচ যদি সকাল সকাল প্লাটফর্ম নম্বর স্কিনে তুলে দেওয়া যেত তাহলে কিন্তু পেরেশান এবং বিরক্তিবোধ দু'টিই লাঘব হয়ে যেত। এতে হয়তো খুব বেশি পরিশ্রমের দরকার পড়তো না। রেলওয়ের লোকজনের বক্তব্য- সকাল পৌঁনে ৮টায় ট্রেনটি ছাড়বে। প্রায় চল্লিশ মিনিট আগে প্লাটফর্ম দেওয়া হচ্ছে, এটা যথেষ্ট সময়।
কিন্তু যাত্রীরা রেলওয়ের এই বক্তব্যে একমত হতে পারছেন না। নজরুল নামের এক যাত্রী জানান, ঢাকার রাস্তার কথা বিবেচনা করে লোকজন সাধারণত দুই-তিন ঘণ্টা সময় হাতে নিয়ে বের হয়। আগে ভাগে হাজির হয়ে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করে। আবার বসার জায়গাও কম, সে কারণে লোকজনকে স্কিনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যে সব ট্রেন পরে প্লাটফর্মে আসে সেগুলোর জন্য হয়তো আগে ভাগে ঘোষণা করা যায় না। কিন্তু যে ট্রেনগুলো ভোররাতে এসে বসে থাকে সেগুলোর জন্য আগে ভাগে ঘোষণা আসাটাই কাম্য।
মহানগর প্রভাতী ট্রেনটির কোনো ডে অফ নেই। শুধুমাত্র ঈদের দিন ছাড়া বছরের প্রত্যেক দিন চলাচল করে। প্রতিদিন সকাল পৌঁনে ৮টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। নির্ধারিত যাত্রা বিরতি রয়েছে ৭টি। এগুলো হচ্ছে বিমানবন্দর, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া, কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনী। দুপুর পৌঁনে ২টায় চট্টগ্রামে পোঁছে যায়। এরপর রাত ১১টায় তুর্ণা নিশীথা নাম ধারণ করে ঢাকার পথে ছেড়ে আসে। ভোররাতে ঢাকা ফিরে আবার মহানগর প্রভাতী হয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা। এভাবে অবিরাম চলাচল করছে ট্রেনটি।
যাত্রীর চাপ বেশি থাকলে ২৩টি পর্যন্ত বগি দেখা যায়। কিন্তু ৮ মে যাত্রীর চাপ কম থাকায় ১৭টি বগি নিয়ে যাত্রা করছে। রমজানের ১৫ তারিখ পর্যন্ত যাত্রী কম থাকে বলে দাবি করেন ট্রেনটির টেলিকম সহকারী রবিউল ইসলাম রাজু।
ট্রেনটিতে নানা ক্যাটাগরির আসন রয়েছে। এসি স্লিপার থেকে শুরু করে এসি, ননএসি কেবিন, এসি চেয়ারকোচ ও নন এসি চেয়ারকোচ বিদ্যমান।
এদিকে যথা সময়েই যাত্রা করল চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী। আশার কথা হচ্ছে, কমলাপুর রেল স্টেশন এখন আরও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আগে রেল লাইনের ফাঁকে ফাঁকে নানা ময়লা আবর্জনায় স্তূপ দেখা যেত। দুর্গন্ধে নাক চেপে চলাচল করতে হতো। কিন্তু এখন প্লাটফর্মের পাশাপাশি লাইনও বেশ পরিচ্ছন্ন।
লিখতে লিখতে পৌঁছে গেলাম প্রথম স্টপেজ বিমানবন্দর স্টেশনে। এই স্টেশনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা আগের থেকে উল্লেখ করার মতো। ট্রেনের ভেতরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাও আশা করার মতো।