রংপুর সিটি নির্বাচন : ১৯৩ কেন্দ্রের ১২৮টিই ঝুঁকিপূর্ণ

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-08-25 17:17:46

রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে, ততোই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ। বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে মারমুখি অবস্থান ভোট সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইতোমধ্যে সিটির ১৯৩ কেন্দ্রের ১২৮টিকেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। তবে এ বিষয়ে কমিশনের ভাষ্য, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা। সরেজমিনে দেখা গেছে, অলি-গলি, বাসা-বাড়ি, হোটেল-খামার সব খানেই ভোটের আলোচনা। কী হবে সে দিন? কে হবেন বিজয়ী? আর ভোটের পরিবেশই বা কেমন হবে তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে কৌতুহল। এবার সাত মেয়রপ্রার্থীসহ ভোটযুদ্ধে নেমেছেন ২৮৩ প্রার্থী। প্রত্যেকেই নিজের বিজয় নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে নেমেছেন মাঠে। এদিকে, ভোট যতই ঘনিয়ে আসছে ততই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে ভোটারদের মধ্যে। গত শনিবার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবেদ আলীর নির্বাচনী অফিসে আগুনের ঘটনা ঘটে। তিনি প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে দুষছেন। এর আগে বৃহষ্পতিবার মধ্য রাতে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মাসুদ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুত্বর আহত হন। এ জন্য তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজার রহমান তরুকে দায়ী করছেন। মাসুদ বলেন, বিভিন্ন সময় তিনি (তরু) আমাকে এবং আমার পক্ষের ভোটার ও সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়ে আমি ও আমার লোকজন থানায় ৮টি সাধারণ ডায়েরি করলেও প্রশাশন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এক পর্যায়ে তরুর লোকজন আমার ওপর হামলা করে। মৃতভেবে ফেলে রেখে যায়। খোঁজ পেয়ে স্বজনরা আমাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে মাসুদ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। এদিকে, নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন প্রার্থীর ভোটারদেরও হুমিক-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি অস্ত্র ঠেকিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রাণ নাশের হুমকিও। কিন্তু ভয়ে তারা বিষয়টি প্রশাসনকে জানাতে আগ্রহী নন। নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ড বাবুখা। গত পরশু রাতে সেখানকার এক ভোটারকে হত্যার হুমকি দিয়েছে প্রতিপক্ষ। নিরাপত্তার কথা ভেবে নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি। একইভাবে নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডেও ঘটছে হুমকি-ধামকির ঘটনা। নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আব্দুল মতিন বলেন, আমি দেশের একজন নাগরিক। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব। কিন্তু এখনই যে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবো কি না তা নিয়ে সন্দিহান আমি। একই কথা বলেন ওই ওয়ার্ডের ভোটার শাহনাজ। তিনি বলেন, প্রতি রাতেই আমাদের বাসায় কিছু মহিলা আসছেন। প্রথমে ভালো ব্যবহার করলেও যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সিটির করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্র্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ কাউন্সিলরের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন, ছুরিকাহত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এগুলো ফৌজদারি অপরাধ। তবে নির্বাচনের সঙ্গে এসবের সম্পর্ক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বিষয়ে সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, ওই কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর