তাপমাত্রা ৪০ ছাড়াতে পারে

ঢাকা, জাতীয়

সাদরুল আবেদিন, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 04:11:09

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। প্রকৃতিতে হালকা বাতাস থাকলেও তা গরম অনুভূতি হয়। সূর্যের খরতাপে পুড়ছে পুরো দেশ। গরমের প্রচণ্ডতায় রাস্তা-ঘাটে চলাচল ব্যাপক বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়া কৃষকরাও বের হতে পারছেন না মাঠে। গরমে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়েও মানুষ দিশেহারা। তাই বৃষ্টির দেখা কবে মিলবে তার দিকে চোখ গোটা দেশের মানুষের।

এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, রোববার (২৮ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বিরাজ করতে পারে। আরও চার থেকে পাঁচদিন এমন অসহনীয় গরম অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের কিছু কিছু স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও পুরো বৈশাখ মাসে প্রচণ্ড তাপমাত্রার অবস্থার পরিবর্তন সহজে হবে না। আর ঘূর্ণিঝড় ‘ফোনি’র প্রভাব এখনো বাংলাদেশে পড়েনি।

আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক বার্তা২৪.কম-কে জানান, দেশের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হলেও পুরোপুরি বৃষ্টি হতে আরও চার থেকে পাঁচদিন সময় লাগবে। আগামী ২ অথবা ৩ মে থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিরাজ করতে পারে।

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ফোনি’ দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর অবস্থান করছে। এটি রোববার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

নাজমুল হক আরও বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় ফোনির কোনো প্রভাব এখনো বাংলাদেশে পড়েনি। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে উপকূলীয় অঞ্চলের বসবাসকারীদের সর্তক থাকতে হবে। তারা আমাদের পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করলেই হবে।'

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু’এক অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

সিলেট, শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসহ রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে ৭৭ মিলিমিটার, ডিমলা ৪৮ মিলিমিটার এবং রাজারহাটে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাজশাহীতে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়া, ডিমলায় ২১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনা ও যশোরে ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গোপালগঞ্জে ২২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ছিল ২৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ঢাকা ও রাঙামাটি অঞ্চলসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে।

ঢাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।

সমুদ্রবন্দরের সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর