পায়রা বন্দরে দু'টি টার্মিনাল নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 18:32:00

পায়রা বন্দরের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে দু'টি টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ছয়টি বার্থসহ কমপক্ষে দু'টি টার্মিনাল নির্মাণ এবং ১০ দশমিক ৫০ মিটার গভীরতার চ্যানেল সংরক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে একনেক সভায় ৩ হাজার ৯৮২ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোরিয়ার তিনটি কোম্পানির (জয়েন্ট ভেঞ্চার) মধ্যে চুক্তি হয়। কোম্পানি তিনটি হলো-কুনহা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসাল্টিং কোম্পানি লিমিটেড, দায়েইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং হেরিম আর্কিটেক্টস অ্যান্ড প্লানার্স কোম্পানি লিমিটেড।

চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর এম জাহাঙ্গীর আলম, কুনহা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসাল্টিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট জিয়ং লানোহ, দায়েরইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক দায়ে জিনকিম এবং হেরিম আর্কিটেক্টস অ্যান্ড প্লানার্স কোম্পানি লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার ইউন স্যাঙজো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুস সামাদ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরামর্শকের কাজগুলো একটি একক টিমের সঙ্গে কয়েকটি সাব-টিমের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। কুনহা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসাল্টিং কোম্পানি লিমিটেড (লিড পার্টনার), দায়েইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (পার্টনার) এবং হেরিম আর্কিটেক্টস অ্যান্ড প্লানার্স কোম্পানি লিমিটেড (পার্টনার) মূল পরামর্শক এবং বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান সিমবায়োটিক আর্কিটেক্টস সাব-পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজকে দু’টি ফেইজে ভাগ করা হয়েছে। ডিজাইন ফেইজ এবং সুপারভিশন ফেইজ। ডিজাইন ফেইজ অনুযায়ী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের প্রতিটি অঙ্গের পরিকল্পনা প্রণয়ন, ডিজাইন, ড্রইং, প্রাক্কলন, টেন্ডার ডকুমেন্ট এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতির স্পেসিফিকেশন ইত্যাদি প্রস্তুত করবে। সিভিল, ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ও আনুষঙ্গিক কাজ করবে সুপারভিশন ফেইজ। পরামর্শক কাজের চুক্তিমূল্য ৭৯,৫২,২৩,৭৮৪.৮০ টাকা। চুক্তি স্বাক্ষরের পর কাজ সম্পন্ন করার সময় ৩৬ মাস। ডিজাইন ফেইজের জন্য ৬ মাস এবং সুপারভিশন ফেইজের জন্য ৩০ মাস সময়।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একটি ‘ভোরের পাখি’ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় স্লোপ প্রোটেকশনসহ জেটি, ইউটিলিটি সার্ভিস এবং ইয়ার্ড সুবিধাসহ টার্মিনাল, অস্থায়ী জেটি এবং বিদ্যমান পানি উন্নয়ন বোর্ড রোড পুনর্নির্মাণ, মেরিন ক্রাফট এবং ইয়ার্ড ইকুইপমেন্ট ক্রয়, ছয়-লেন বিশিষ্ট সাড়ে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পোর্ট এক্সেস রোড এবং ছয়-লেন বিশিষ্ট মিডিয়াম সেতু (৫২০ মিটার) এবং প্রায় ১০৫০ মিটার দীর্ঘ ছয়-লেন বিশিষ্ট রিভার ক্রসিং ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

উল্লেখ্য, পায়রা বন্দর বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে বাস্তবায়নাধীন ১০টি ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ প্রকল্পের আওতাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। সরকার পায়রা বন্দরের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় স্বল্প পরিসরে বন্দরের কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে মালামাল খালাস করে বিভিন্ন নৌ-রুটের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে পরিবহন করা হচ্ছে।

দেশের ক্রমবর্ধমান ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের ফলে বন্দরের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় পায়রা সমুদ্র বন্দরের উদ্বোধন করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর