রামেক-এ ফাইলবন্দি ৩৭৫ মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন

রাজশাহী, জাতীয়

শাহরিয়ায় হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 17:10:00

রাজশাহী থেকে: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক)। পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজধানীর পর সবচেয়ে বেশি অপরাধ সংঘটিত হয় এ বিভাগীয় অঞ্চলে। আর যার ফলে হত্যা বা খুনের মতো ঘটনার কারণ জানতে শরণাপন্ন হতে হয় রামেক-এর ফরেনসিক বিভাগের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের উপর।

সদ্য অবসরপ্রাপ্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড.এনামুল হক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৭৫ মরদেহের ময়না তদন্তের প্রতিবেদন জমা আছে। যেগুলো এখনো প্রস্তুত হয়নি। নতুন বছরে এ সংখ্যাটি আরও বেড়েছে।’

নিজের দোষ না এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘সেই সংখ্যার প্রায় অর্ধেকের মতো ছিল আমার সময়ে।’

সাবেক এই ফরেনসিক প্রধান আরও বলেন, ‘যেসব ঘটনার গুরুত্ব ছিল। সেসব ঘটনার ভিসেরা প্রতিবেদন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন খুব দ্রুতই দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে ফরেনসিক বিভাগের জনবল সংকটে সবগুলো প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হয়নি।’

ড. এনামুল হকের তথ্যের সঙ্গে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কথার মিল খুঁজে পাওয়া গেছে।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও ভিসেরা রিপোর্টের জন্য অনেক মামলার শেষ পরিণতি থেমে আছে। যেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ মামলা, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয়। সেগুলো আমরা ব্যক্তিগত যোগাযোগ করে দ্রুত বের করে আনার চেষ্টা করি। তবে এখনো, শত শত মামলা অমীমাংসিত আছে, ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের জন্য।’

এদিকে শনিবার (২০ এপ্রিল) সরেজমিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে গেলে দেখা যায়, এক জন চিকিৎসক আর কর্মচারীর সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ।

রবিউল ইসলাম নামের একজন এসেছেন তার বোনের হত্যার ফরেনসিক ল্যাব প্রতিবেদনের খোঁজ নিতে।

রবিউলের অভিযোগ, এক বছর আগের ঘটনায় ছয় মাস পর ভিসেরা প্রতিবেদন পেলেও পরবর্তী ছয় মাসে পাননি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন।

বোনের মৃত্যুর বর্ণনা দিয়ে রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নতুন সংসারে বোন আমার গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যায়। আমাদের প্রথম থেকেই সন্দেহ। বোন আমার মরেনি। তাকে খুন করে ওড়না দিয়ে ফাঁস পড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।’

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বর্তমান প্রধান রায়হান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি ময়না তদন্তের রিপোর্টগুলো দ্রুত দেওয়ার। তবে দেব বললেই হয় না, একটি প্রক্রিয়ার মাধ্য দিয়ে যেতে হয়।’

জমে থাকা, অমীমাংসিত মামলার ক্লু হিসেবে পরীক্ষায় পাঠানো ৩৭৫ মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি অস্বীকার করছি না, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জমা নেই। তবে যতগুলো বলা হচ্ছে এতটা না। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী, যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদনগুলো ছাড়ার চেষ্টা করছি।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর