অবৈধ ভবন মালিকদের তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ করবো: গণপূর্ত মন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 08:38:02

রাজধানী ঢাকার অনুমোদনহীন বহুতল ভবনসমূহ চিহ্নিত করতে মাঠে নেমেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ২৪টি টিম। তদন্তকারী টিমকে সর্বোচ্চ ১৫দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এর আগেই রাজধানীর বহুতল ভবন চিহ্নত করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

তিনি বলেছেন, ‘দেখব কোন বহুতল ভবন ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অথবা শর্তাদি প্রতিপালন করে নাই। সেই সব ভবনের মালিকদের চেহারা মানুষের জানা উচিত। এবার শুধু রাজউকের দেয়ালে নয়, জাতীয় দৈনিকে ও টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করবো, কারা অর্থলোভী মানুষরূপী নরপিশাচ।’

রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে রাজউক অডিটোরিয়ামে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সম্প্রতি বনানী এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে ও ঢাকা শহরে বিদ্যমান ভবনসমূহের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আশু করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক সভায় মন্ত্রী একথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাহাদাত হোসেন, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. রাশিদুল ইসলাম, স্থাপত্য অধিদফতরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান প্রমুখ।

গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘সোমবার (১ এপ্রিল) রাজউকের ২৪টি টিম বহুতল ভবন চিহ্নিত করতে মাঠে নামবে। সর্বোচ্চ সময় রাখছি ১৫ দিন। আশাকরি ১৫ দিনের পূর্বেই বহুতল ভবনের রিপোর্ট পেয়ে যাব। রিপোর্ট পাওয়ার পর তা জনসন্মুখে প্রকাশ করবো। এবার তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখবে। এবার শুধু রাজউকের দেয়ালে নয়, জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশনগুলোতে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করবো।’

‘মানুষের জানা দরকার কারা লম্বা লম্বা বক্তব্য রাখেন, তারা নিজেরা কী অবস্থায় থাকেন বা কারা আইন লঙ্ঘন করেন, তাদের চেহারা দেশবাসীর জানা উচিত। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে অবৈধ ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। অবৈধ ভবন অনুমোদনে যেই জড়িত থাকুক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

মন্ত্রী বলেন, ‘ভবনে অবশ্যই পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকতে হবে। ভবন ব্যবহার চূড়ান্ত হওয়ার পর হোল্ডিং নম্বর থাকতে হবে। অর্থাৎ যে সকল বিষয় সন্নিবেশিত থাকলে ভবনটি নিরাপদ, বাস উপযোগী, ব্যবহার উপযোগী পরিবেশ সম্মত থাকবে, সেসবের কোনো একটি শর্ত পরিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অকুপেন্সি (ভোগ দখল) সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে না, বিল্ডিং ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’

বিল্ডিং কোড অনুযায়ী বহুতল ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ধরুন সকল কিছু ঠিক আছে, কিন্তু অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ঠিক নাই অথবা তার একটি অতিরিক্ত সিঁড়ি রাখার কথা ছিল, রাখেন নাই। তাকে নির্দেশ দেব এটা পালন করতে হবে। যদি তিনি না রাখেন, সেই ভবনকে ব্যবহার করতে পারবেন না।’

‘যেটা অনুমোদনহীন সেই ভবন ভেঙে ফেলতে হবে। অনুমোদনের বাইরে কোন অবকাঠামো থাকার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি স্তরে ডিজিটালাইজড ব্যবস্থা করছি, যেখানে অকুপেন্সি সার্টিফিকেটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সাথে সাথে অবৈধ হয়ে যাবে। একদিনেই সব করে ফেলা সম্ভব না। উদ্যোগ নিয়েছি, পুরান ঢাকার অপরিকল্পিত বাড়ি ভেঙে বাসযোগ্য বহুতল ভবন করে দেব। সেখানে হার অনুযায়ী ভবন মালিকদের ফ্লাট করে দেব।’

নতুন ঢাকা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নতুন ঢাকায় ৪৫ শতাংশ জায়গা ফাঁকা রেখে ইমারত অনুমোদন দিচ্ছি। ঢাকার ভেতরে অনেক অনুমোদনহীন ভবন অথবা নকশা পরিপন্থী অনেক ভবন নির্মাণ করেছে। প্রথম বহুতল ভবনগুলোকে ধরব, এরপর দ্বিতীয় দফায় সকল ভবন পরিদর্শন করে বিল্ডিং কোডের আওতায় আনার জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, সেই ব্যবস্থা করবো।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর