আয়োজকদের কারণে জমেনি ময়মনসিংহ বইমেলা

ময়মনসিংহ, জাতীয়

উবায়দুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ময়মনসিংহ, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 10:10:15

‘পাঠক আছে ক্রেতা নেই, মেজাজটা ভালো নেই’। পুরনো এই বাক্যেই ময়মনসিংহের বইমেলার বাস্তব চিত্র তুলে ধরলেন পঙ্খিরাজ স্টলের দায়িত্বে থাকা বিক্রয়কর্মী মাহমুদা মৌ। তার ভাষ্যে, ‘মেলায় কাঙ্ক্ষিত লোক সমাগম হয়নি। এর কারণ যতটুকু প্রচারণার আলো ছড়ানোর দরকার ছিলো, ততটুকু করতে ব্যর্থ হয়েছেন আয়োজকরা। এর ফলে দিনভর মেলার স্টলগুলো খাঁ খাঁ করছে এবং পর্যাপ্ত পাঠক-ক্রেতা মিলছে না।’

শুধু যে কেবল এ বিক্রয়কর্মীর বক্তব্য এমন তা নয়। কথাপ্রকাশ স্টলের সেলস এক্সিকিউটিভ রাজু আহমেদ বললেন, ‘ময়মনসিংহের বইমেলা আমাদের আশা পূরণ করতে পারেনি। চট্টগ্রামে একদিনে আমরা যে বই বিক্রি করেছি ময়মনসিংহে পাঁচদিনে তার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারেনি। দায়সারা গোছের প্রচারণা বইমেলাটিকে মার খাইয়ে দিয়েছে।’

ছয়দিন ব্যাপী বিভাগীয় বইমেলা, উদ্বোধনীর দিন এসেছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু ও বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ড. জাফর ইকবাল। গমগম করেছিলো মেলা প্রাঙ্গণ সে দিন। বাদবাকি চারটি দিন যে খাঁ খাঁ করছে পাঠকের অভাবেই। সন্ধ্যার পর খানিক দর্শনার্থী-পাঠকের দেখা মিললেও বাদবাকি সময়টা অলস বসেই কাটাতে হচ্ছে বিক্রয়কর্মীদের। ফলে ময়মনসিংহের এবারের বইমেলায় এসে তাদের মন খারাপ। সামান্য খরচ বাদে তারা কাঙ্ক্ষিত ব্যবসা করতে পারেননি তারা।

পুথিনিলয় স্টলের দায়িত্বে থাকা নাজমুল হক জানালেন, ‘বিকেলের দিকে কিছু দর্শনার্থীরা স্টলে আসছে, বইও দেখছে পাশাপাশি ছবিও তুলছে কিন্তু বই না কিনেই চলে যাচ্ছে। আসলে মূল পাঠক যারা তাদের দেখা মিলছে না মেলা চত্বরে।’

শুক্রবার (২৯ মার্চ) মেলার ৫ম দিনে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলায় অবস্থান করে এমন চিত্রই দেখা মিলে।

কিন্তু কেন মার খেল বইমেলা- এমন প্রশ্ন করতেই সরাসরি বিক্রয়কর্মীদের অভিযোগ মেলার আয়োজকদের ঘিরেই। প্রচারণার আলো তারা ঠিকমত ছড়াতে না পারায় বইপ্রেমী পাঠকদের উপস্থিতি মেলায় কম। গতবার যেখানে একদিনেই যে পরিমাণ বিক্রি হয়েছে এবার পাঁচদিন মিলেও তেমনটি হয়নি।

একই রকম অভিযোগের তীর ছুঁড়লেন স্থানীয় সাহিত্য সংগঠক আলী ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘আয়োজকরা শুধু একটা প্রজ্ঞাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন। কিন্তু পাঠকদের আকৃষ্ট করার জন্য যেটুকু প্রচারণা করার দরকার এটা তারা করেন না। যারা লেখালেখি করেন, স্থানীয়ভাবে যারা প্রকাশনার সঙ্গে জড়িত কিংবা সাহিত্যের সংগঠন তাদেরকে কোন না কোনভাবে সংযুক্ত করা দরকার। কিন্তু কখনোই তা করা হয় না। আগে থেকেই পর্যাপ্ত প্রচারণা ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে যদি এটি প্রচার করা হতো তাহলে বইমেলাটা এভাবে মার খেত না।’

এ অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাসের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর