‘মুক্তিযুদ্ধে ২০ জেলায় ৫১২১ গণহত্যা হয়েছে’

ঢাকা, জাতীয়

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-20 16:11:09

মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের ২০টি জেলায় পাঁচ হাজার ১২১টি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। প্রত্যেক গণহত্যায় পাঁচ থেকে এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের জরিপে মুক্তিযুদ্ধের এসব তথ্য উঠে এসেছে।

শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রহমান মিলনায়তনে গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ' শীর্ষক সেমিনারে আনুষ্ঠানিকভাবে এ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

সেমিনারে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধে ২০টি জেলায় বধ্যভূমি ৪০৪, গণকবর ৫০২ এবং নির্যাতন কেন্দ্র ছিল ৫৪৭টি। জেলাগুলো হলো- নীলফামারী, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, নাটোর, কুড়িগ্রাম, পাবনা, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, ভোলা, খুলনা, গাইবান্ধা, জামালপুর, নড়াইল, পঞ্চগড়, মৌলভীবাজার, যশোর, লালমনিরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার ও বরিশাল।

সেমিনারে জরিপটির ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। তাঁর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল উপস্থিত ছিলেন।

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে যে গণহত্যা, বিশেষ করে ময়মনসিংহে যে গণহত্যা হয়েছে, আমি তার প্রত্যক্ষদর্শী। সেসময় বহু হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেই সংখ্যা আমাদের আজও অজানা। আজও অনেক গণকবর ও বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র জাতির দায় মুক্তির জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছে তা তরুণ প্রজন্মকে গণহত্যার সঠিক ইতিহাস জানতে সহায়তা করবে। এই ইতিহাসকে জাগ্রত রাখতে খুলনায় গণহত্যা জাদুঘর প্রতিষ্ঠার কাজ করছি আমরা।

সেমিনারে, গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে সবার জন্য উন্মুক্ত করতে www.genocidemuseumbd.org শীর্ষক একটি ওয়েব সাইটের উদ্বোধন করা হয়।

গণহত্যার জরিপ প্রসঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আজকে যে বিষয়টি আমরা আলোচনা করছি তা আমাদের অস্তিত্বের সাথে জড়িত, আমাদের শেকড়ের সাথে জড়িত। সেই শেকড়ের অনুসন্ধানে জাতি হিসেবে আমরা অনেক দেরি করে ফেলেছি। আরেকটু দেরি হলে তা হয়তো উদ্ধার করা যেত না। কারণ যারা আজ এ নিয়ে কাজ করছেন, তাদের হয়তো পেতাম না। তারা গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী, ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী।’

এর আগে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমরা খুব কম জানি। গণহত্যা-নির্যাতনের কথা ভুলে গেলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পুরোপরি ফুটে ওঠে না। আর মুক্তিযুদ্ধ না থাকলে বাংলাদেশ থাকে না।’

সেমিনারে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এজিপিএস সার্ভে গুগলে অন্তর্ভুক্তি করানোর দাবি জানানো হ। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সরকারকে কাজ করার আহবান জানান বক্তারা। অনুষ্ঠানের শুরুতে গণহত্যা-গণকবর-বধ্যভূমি জরিপের ১০টি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর