টাঙ্গাইল সদরের জোবায়দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী পিয়াসা সরকার। ছবি আঁকার হাত খুবই ভালো। ছবি আঁকায় জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কারও অর্জন করেছে সে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার স্বপ্নের মানুষ। তাই গত আড়াই মাস চেষ্টা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যার একটি পোট্রেট আঁকে পিয়াসা।
তার মা তাপসী রানী সরকার জানান, মেয়েটা অনেক পরিশ্রম করেছে। মুখ মিলেতো চোখ মিলে না, চুল মিলেতো ব্রু মিলে না। আড়াই মাস চেষ্টার পর বঙ্গবন্ধুর কন্যার ছবি নিয়ে পিয়াসার সন্তুষ্টি আসে। উদ্দেশ্য একটাই, যেকোনোভাবেই হোক এই ছবিটি সে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেবে। তার সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে।
এবার জানা যাক স্বপ্ন পূরণের গল্প। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ছবিটি নিয়ে তিনদিন আগে তারা ঢাকায় আসে। শিক্ষায় অবদান রাখার জন্য মোট ১০৮ জনকে এই অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হবে, পিয়াসা এই ভাগ্যবানদের মধ্যে একজন। গত দুইদিন তারা অনেক চেষ্টা করেও ছবিটি প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়ার কোনো সুযোগ খুঁজে পায়নি। নিরাপত্তা বিভাগ থেকেও বলে দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত কোনো কিছু সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করা যাবে না।
পুরোপুরি হতাশ হয়ে বুধবার (১৩ মার্চ) মাকে সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসে পিয়াসা। কাগজে মোড়ানো ছবিটি নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন তার বাবা শংকর চন্দ্র সরকার। মা-মেয়ে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হলেই তারা ছবিটি নিয়েই টাঙ্গাইল চলে যাবেন।
কিন্তু ১১ বছরের পিয়াসা তার চেষ্টায় অনড়। যথারীতি নাম ডাকা হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে গিয়ে পুরস্কার নেয় পিয়াসা সরকার। প্রধানমন্ত্রীর শিশুসুলভ আন্তরিকতায় সাহসী হয়ে ওঠে পিয়াসা। সাহস কণ্ঠে বলেই ফেলে ছবিটির কথা। এ সময় কান্না করে দেয় সে। তাকে যে আনতে দেওয়া হয়নি সেটিও বলতে ভুলেনি পিয়াসা। সাথে সাথেই প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন ছবিটি নিয়ে আসার জন্য। এরপর বাইরে ছবি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বাবাকে ভেতরে নিয়ে আসা হয়। অবশেষে অনুষ্ঠানের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার আঁকা পোট্রেটটি তুলে দেয় পিয়াসা।
বিকেলে যখন পিয়াসার বাবা-মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় ততক্ষণে তারা টাঙ্গাইল চলে গেছেন। তারা জানালেন, স্বপ্ন পূরণের আনন্দ আর খুশিতে তখন কেঁদেছিল পিয়াসা।
লেখক: প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব