জনগণের সেবক হয়েই দেশ চালাতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

রাজশাহী, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম   | 2023-08-28 18:09:48

টানা তিনবার সরকার গঠন করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সেবক হয়েই দেশ পরিচালনা করতে চান।

তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রেখেছে। আমরা টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করেছি। বর্তমান সরকার শাসক হিসেবে নয়, জনগণের সেবক হিসেবে দেশ পরিচালনা করতে চায়।’

রোববার (০৩ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী সেনানিবাসে সেনাবাহিনীর ৭, ৮, ৯ এবং ১০ বীর এর ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এছাড়া জাতির প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর যে সকল সদস্য বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ স্বীকার করে কাজ করছেন তাদেরকেও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পতাকা হলো জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান এবং মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সকল সৈনিকের পবিত্র দায়িত্ব।’

সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যে কোনো ইউনিটের জন্য বিরল সম্মান ও গৌরবের। কর্মদক্ষতা, কঠোর অনুশীলন এবং কর্তব্য নিষ্ঠার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা পেলেন, তার মর্যাদা রক্ষার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে আপনারা সব সময় প্রস্তুত থাকবেন। পতাকা পাওয়ায় আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা সত্বেও একটি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার নির্দেশেই ১৯৭২ সালে কুমিল্লা সেনানিবাসে গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমি।’

‘বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে একটি শান্তিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেন। তার সুদূরপ্রসারী এ প্রতিরক্ষা নির্দেশনার আলোকেই সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশ ও দেশের বাইরে একটি অত্যন্ত সম্মানজনক অবস্থানে উন্নীত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদাতিক বাহিনীর গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাশাপাশি পদাতিক বাহিনীর দ্বিতীয় রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন আমরাই সর্বপ্রথম উপলব্ধি করেছি।’

‘১৯৯৯ সালে আমি বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট গঠনের ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন প্রদান করি। ২০০১ সালের ২১শে এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের পতাকা উত্তোলন করি।’

‘২০১১ সালে আমি এ রেজিমেন্টকে মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় পতাকা প্রদান করি। বর্তমানে এই রেজিমেন্টে দুটি প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নসহ ৪৩টি ইউনিট রয়েছে।

একটি আধুনিক ও চৌকস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে তার সরকার বদ্ধপরিকর জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আধুনিক বাহিনী গড়ে তুলতে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

‘এর আওতায় সেনাবাহিনীর নতুন নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা তিনটি নতুন ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রথমবারের মতো প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, দেশের আকাশ প্রতিরক্ষাকে আরও সুসংহত করতে সংযোজিত হয়েছে এমএলআরএস ও মিসাইল রেজিমেন্ট। আধুনিক বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হেলিকপ্টার, আর্টিলারি গান এবং মডার্ন ইনফ্যান্ট্রি গেজেট সংযোজন করে সেনাবাহিনীর আভিযানিক সক্ষমতাকে বৃদ্ধি করেছি’।

এরআগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী সেনানিবাসে পৌঁছেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিনি শহীদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে আসেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বীর রেজিমেন্টের চারটি ব্যাটালিয়নকে বীর এর জাতীয় পতাকা (ন্যাশনাল ন্ট্যান্ডার্ড) প্রদান এবং প্যারেড পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ ডিসপ্লে প্রদর্শনী উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, ওমর ফারুক চৌধুরী, প্রকৌশলী এনামুল হক, আয়েন উদ্দিন, ডা. মনসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর