রাজশাহীতে মালিককে গুম করে বাড়ি দখলের অভিযোগ

রাজশাহী, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 01:25:00

রাজশাহীতে মালিককে গুম করে বাড়ি দখল করে ওয়ারিশদের উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে হুমায়রা খালিদ রিজু নামে এক নারী এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী দাবি করেন, তার পালিত বাবা হুমায়ন খালিদকে ‘গুম’ করে রেখেছেন ভাগ্নে সাব্বির খান। এরপর তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হুয়ায়রা খালিদ রিজু বলেন, ‘আমার পালিত বাবা হুমায়ন খালিদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। এ কারণে তিনি আমাকে ১৯৭২ সালের মে মাসে মাত্র দেড়মাস বয়সে পালিত কন্যা হিসেবে গ্রহণ করেন। এখন তার দেওয়া বাড়ি থেকে আমাকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বাবা ৩০ থেকে ৩২ বছর আগেই পুরাতন নাটোর রোডের তার ‘হিলালী ভিলা’ নামের চারতলা বাড়িটি মৌখিকভাবে দান করার প্রস্তাব দেন। এরপর তিনি বাড়িটি আমাকে মৌখিকভাবে দান করেন এবং দখল হস্তান্তর করেন। হস্তান্তরের পর থেকে আমি বাবার আমলের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে নিচ ও দ্বিতীয় তলার দোকানঘরের ভাড়া আদায় করতে থাকি। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আমার বাবা অছিয়ত দলিলের মাধ্যমে বাড়িটি আমার এবং আমার দুই সন্তানের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৭ সাল পর্যন্ত আমি বাড়িটিতে বসবাস করি। কিন্তু এখন বাড়িটি দখল করেছেন বাবার ভাগ্নে সাব্বির। আমার বাবার বয়স আনুমানিক ৯০ বছর। বাবার পৈত্রিক বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। বার্ধ্যক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবার কারণে ২০১৭ সালের দিকে বাবার বোনের ছেলে সাব্বির খান সিরাজগঞ্জ থেকে এসে ঢাকায় চিকিৎসার কথা বলে বাবাকে রাজশাহী থেকে নিয়ে যায়। বয়স হবার কারণে আমার বাবার সাধারণ জ্ঞানবৃদ্ধি লোপ পেয়েছে।’

হুমায়রা খালিদ রিজু বলেন, ‘এ সুযোগে সাব্বির খান বাবাকে ভুল বুঝিয়ে আমার নামের অছিয়তনামা দলিল বাতিলের জন্য রাজশাহী সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করান। ২০১৭ সালের জুলাইয়ের পর থেকে আমার বাবার সাথে আমাকে যোগাযোগ করতে দেন না। বাবা বর্তমানে কোথায় আছেন, সেটিও আমি জানি না। এমনকি তিনি মারা গেছেন কী না- সে সম্পর্কেও আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। মূলত কয়েক কোটি টাকা মূল্যের বাড়িটি আত্মসাত এবং মোটা অঙ্কের দোকানের ভাড়া আত্মসাত করার উদ্দেশ্যেই এমনটি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, তাকে কৌশলে ‘গুম’ করা হয়েছে। এর প্রতিকার পেতে আমি রাজশাহীর যুগ্ম জেলা জজ ১ নম্বর আদালতে মামলা দায়ের করেছি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে দুপুরে সাব্বিরের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে হিলালী ভবনের নিচতলার ভাড়াটিয়া শরিফুলের কাছে বাড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অছিয়তনামা দলিল করে দিলেও জমি বিক্রি করা যায়। সেভাবেই সাব্বির খান আমাদের কাছে ভবনটি বিক্রি করেছেন।’

শরিফুলের ভাই কেয়ারুলেরেও একই কথা। জানালেন, ভবনটি তারা সাব্বির খান থেকে কিনে নিয়েছেন। এখন তারা কাউকেই ভাড়া দেন না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর