১৩০ কনটেইনার ফল ধ্বংস করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 01:06:53

১৩০ কনটেইনার পচা ফল ধ্বংস করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৭ থেকে ২১ কনটেইনার হারে পচা ফল ধ্বংস করা হয়। প্রথম দিন ধ্বংস করা হয় ১৭ কনটেইনার। তার পরের দিন ১৮ কনটেইনার। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ ৬ কনটেইনারসহ এ পর্যন্ত মোট ১৩০ কনটেইনার পচা ফল ধ্বংস করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার তপন চন্দ্র দে বার্তা২৪.কমকে বলেন, উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না থাকায় এসব ফল ধ্বংস করা হয়।

বন্দর ও কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, আমদানি করা পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এ সময়ের মধ্যে আমদানিকারক সরবরাহ না নিলে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ নোটিশ ইস্যু করে। এর ১৫ দিন পর ওই পণ্য নিলামে তোলা হয়। তবে দীর্ঘসূত্রতার কারণে বছরের পর বছর নিলাম প্রক্রিয়া আটকে থাকে।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, বছরের পর বছর লোকসান, মাশুল, আইনি জটিলতাসহ নানা কারণে সরবরাহ না নেওয়ায় আমদানি পণ্য যেমন নষ্ট হয়েছে, তেমনি কনটেইনারগুলো আটকে থাকায় সংশ্লিষ্ট শিপিং লাইনের ক্ষতি হয়েছে।

জানা যায়, বিদেশি মুদ্রা খরচ করে মাল্টা ও আপেল কিনেছিলেন ব্যবসায়ীরা। মান খারাপ থাকায় বা দ্রুত খালাস না করায় সেই ফল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে থেকেও নষ্ট হয়েছে। পরে সেগুলো ধ্বংস করে চট্টগ্রাম কাস্টমস।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব ফল নষ্ট হওয়ায় আমদানিকারকের পাশাপাশি আমদানির সঙ্গে যুক্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানই লোকসান গুনেছে। এই যেমন আমদানিকারক ফল খালাস না করায় বা নিলামে তুলে বিক্রি করতে না পারায় রাজস্ব জমা পড়েনি কাস্টমসের তহবিলে। ফলভর্তি কনটেইনার বন্দর চত্বরে রাখার ভাড়াও পায়নি বন্দর কর্তৃপক্ষ। শিপিং এজেন্টও কনটেইনারের ক্ষতিপূরণ মাশুল পায়নি। সব পক্ষের লোকসানের ভিড়ে শুধু লাভের মুখ দেখেছে বিদেশের রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ, ফল রফতানি করে তারা ডলার আদায় করে নিয়েছে।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন গড়ে ধ্বংসের তালিকায় রেখেছে ২১টি কনটেইনারের (প্রতিটি ৪০ ফুট লম্বা) পণ্য।

কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার নাহিদ নওশাদ মুকুল বার্তা২৪.কমকে জানান, আমদানিকারকেরা খালাস না নেওয়ায় এসব ফল নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। এ জন্য ফলের নমুনা পরীক্ষা করে মানুষের খাওয়ার উপযোগী নয় বলে প্রতিবেদন দেয় উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ কেন্দ্র ও পরমাণু শক্তি কমিশন। তাই এসব ফল ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নগরের হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকায় গর্ত খুঁড়ে এসব ফল মাটিচাপা দেওয়া হয়।

আমদানি করা এই ফলের ২৫ শতাংশের মান খারাপ ছিল। এ জন্য রফতানিকারকের কাছে চিঠি দিয়ে মূল্য ছাড়ের আবেদন জানানো হয়। রফতানিকারক আমদানি মূল্যের ২৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার পর দেখা যায়, কনটেইনারের ৭৫ শতাংশ ফলই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে আর খালাস নেয়নি ব্যবসায়ীরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর