পায়রা বন্দরের মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নে পরামর্শক নিয়োগ

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 16:36:16

পায়রা বন্দরের উন্নয়নের লক্ষ্যে সঠিক কৌশলগত পরিকল্পনা ও ডিটেইল মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হলো- নেদারল্যান্ডের রয়েল হাসকনিং ডিএইচভি (Royal Haskoning DHV), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বদ্যিালয়ের (বুয়েট) গবেষণা, পরীক্ষা এবং পরামর্শক ব্যুরো (বিআরটিসি)।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এম জাহাঙ্গীর আলম, বিআরটিসি, বুয়েটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ শামসুল হক এবং রয়েল হাসকনিং এর স্ট্র্যটেজিক বিজনেস ডাইরেক্টর এরিক স্মিট (Erice Smit) নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুস সামাদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারউইজ (Harry Verweij) এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ডিটেইল মাস্টার প্ল্যানসহ অন্যান্য রিপোর্ট প্রণয়নে ১৮ মাস সময় লাগবে। এ জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১২৫ (একশত পঁচিশ কোটি টাকা)। এ কাজে বুয়েটের ২৯ জন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর এবং রয়েল হাসকনিং ডিএইচভির ৬১ জন বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করবেন। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ২৪টি ডেলিভারেবলস রিপোর্ট (সমীক্ষা এবং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফর্মা) প্রণয়ন করবে।

মাস্টার প্ল্যান প্রণীত হলে- বন্দরের অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত প্রায় ৬ হাজার ৫০০ একর জমিতে টপোগ্রাফি ও অন্যান্য সার্ভের মাধ্যমে ল্যান্ডইউজ প্লানসহ টার্মিনাল ও সকল স্থাপনার অবস্থান মাস্টার প্ল্যানে চিহ্নিত হবে। ফলে পায়রা বন্দরের উন্নয়নের জন্য গৃহীত মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাসমূহ মাস্টার প্ল্যান রিপোর্টের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকতারা জানান, মাস্টার প্ল্যানের আন্তর্জাতিকমানের ফিজিবিলিটি স্টাডি ও প্রকিউরমেন্ট ডকুমেন্টস দ্বারা বন্দরের নির্মিতব্য বাণিজ্যিক অবকাঠামোসমূহের জন্য উপযুক্ত বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা যাবে। মাস্টার প্ল্যানের রিপোর্টের আদলে স্মার্টিফিকেশন ও উন্নয়ন-কৌশল অবলম্বন করে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে বৈদেশিক বাণিজ্যে বন্দরের সেবা প্রদান করা যাবে। ফলে, পায়রা বন্দরভিত্তিক দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে মাস্টার প্ল্যান রিপোর্টটি ভূমিকা রাখবে।

পায়রা বন্দর উন্নয়নে মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ, রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিং ও রক্ষণাবেক্ষণ, ড্রাইবাল্ক/ কোলটার্মিনাল নির্মাণ, ভারতীয় ঋণ সহায়তায় মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় ট্রান্সশিপমেন্ট কন্টেইনার টার্মিনাল, ডিপওয়াটার কন্টেইনার টার্মিনাল, অফসোর টার্মিনাল/সাপ্লাইবেস, কোর পোর্ট ইনফ্রাসট্রাকচার, নবায়ণযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন, হাউজিং এডুকেশন হেলথ ফ্যাসিলিটিজ, টাওয়েজ হারবার টাগস্, ইন্টারনাল ফেরী টার্মিণাল নির্মাণ করা হবে। অন্যান্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিমানবন্দর, পায়রা বন্দরের রেল সংযোগ, শিপইয়ার্ড ও শিপ মেরামত কার্যক্রম, লিক্যুইড বাল্ক টার্মিনাল, এলএনজি টার্মিনাল ইত্যাদি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই, পরিবেশ ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভাব নিরূপণ, ক্রয় পরিকল্পনা ও ক্রয় প্রস্তাব প্রণয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্টসমূহ বুয়েটের বিআরটিসির নেতৃত্বে রয়েল হাসকনিং ডিএইচবির সহায়তায় প্রণীত হবে। এ ছাড়া পরামর্শ কাজের শুরুতে একবার এবং রিপোর্ট চূড়ান্তকরার পূর্বে আরও একবার সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে স্টেকহোল্ডারগণের মতামত গ্রহণ করা হবে। পোর্ট অপারেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান এবং কৌশলগত ট্যারিফ প্ল্যান প্রণয়ন এবং গভীর সমুদ্রবন্দরে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর