বসন্ত-ভালোবাসায় ফুল ছড়াবে প্রাণের সৌরভ

ময়মনসিংহ, জাতীয়

উবায়দুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 06:24:47

ভালোবাসার কোনো রঙ নেই। তবুও ফুল ভালোবাসার প্রতীক। তাই তো প্রিয় মানুষটির ভালোবাসাকে রাঙিয়ে তুলতে ফুলের কদর সেই আদিকাল থেকে। মানব-সংস্কৃতি আর বাঙালির জীবনাচারের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে ফুল। 

এ কারণেই হয়তো বাংলা সাহিত্যের কবি সত্যেন্দ্র নাথ দত্ত লিখেছিলেন- ‘জোটে যদি মোটে একটি পয়সা, খাদ্য কিনিয়ো ক্ষুধার লাগি; দুটি যদি জোটে অর্ধেকে তার, ফুল কিনে নিয়ো, হে অনুরাগী!’

পালাবদলের পালায় পড়ে অবশেষে আগমন ঘটেছে ঋতুরাজ বসন্তের। বছরের শেষ ও ঋতুরাজ হওয়ায় একে স্বাগত জানানোর ধাঁচও যেনো রাজকীয়। কোকিলের কুহু কুহু ধ্বনিতে বসন্তের আগমন পৌঁছে যায় জনে জনে। ফুলেরা ইচ্ছেমত রূপ আর গন্ধ বিলিয়ে ঋতুরাজের সামনে নিজেদের জাহির করতে শুরু করে।

পয়লা বসন্তের পরদিনই ভালোবাসা দিবস। এ দুটি দিনকে রাঙাতে রঙ-বেরঙের ফুলই হচ্ছে মূল অনুষঙ্গ। এর নাম শুনলেই যেনো মন নাচে আনন্দে, নির্মল হয় হৃদয়। সব আবেদন, অনুরাগ, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বহি:প্রকাশের বড় মাধ্যম ফুল। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উপহারও যেনো এটি। নানা রঙের ফুলের আবির আর মোহ মোহ গন্ধ কেড়ে নেয় বিষাদ। মন ভাসায় ভালোবাসার প্লাবনে।

বাসন্তী রাঙা শাড়ি, খোঁপায় গাঁধা ফুল আর কপালে লাল টিপ দিয়ে দখিনা হাওয়ায় কেশ উড়িয়ে নিজেকে মেলে ধরবে তরুণী। হাতে গোলাপ নিয়ে প্রিয় মানুষটি তাকে বলবে ‘অনেক ভালোবাসি’। 

আর তাইতো ভালোবাসায় সৌরভ ছড়াতে ব্যস্ততার যেনো শেষ নেয় ফুল বিক্রেতাদের। বাঙালির চিরন্তন বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে ময়মনসিংহ নগরীর গাঙ্গিনারপাড় এলাকার ফুলের দোকানগুলো ভরে গেছে ফুলে ফুলে। আগেভাগেই বাহারি ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন মৌসুমী বিক্রেতারাও। কেউবা গভীর মনযোগে করছেন ফুলের মুকুট বা মালা তৈরির কাজ। 

মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে গাঙ্গিনারপাড় সড়কের মালা স্টোর, রজনীগন্ধা পুষ্প কেন্দ্র, ফুলের মেলাসহ কয়েকটি দোকান ঘুরে এমনটিই দেখা মেলে।

ফুলের মেলা দোকানের ম্যানেজার সেলিম আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, ভালোবাসা দিবসে লাল গোলাপের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। প্রতিবছর বিক্রিও বেশ ভালো হয়। এর বাইরে তরুণ-তরুণীরা চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, লিলি ফুলই বেশি কিনে। বসন্ত উৎসবের জন্য তরুণীরা গাঁদা ফুলের পাশাপাশি মাথার রিংয়ের অর্ডার দিয়েছে বেশি। বুধবার ও বৃহস্পতিবার এ দুদিন কয়েক লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি হবে এমন আশা করছেন তিনি।

 

দিবস আসলেই ফুল বিক্রি করেন প্রাইভেট কার চালক আরাফাত হোসেন। গাঙ্গিনারপাড় সড়কে এক সহকারীকে নিয়ে বিভিন্ন ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন এ মৌসুমী ফুল বিক্রেতা। যশোর ও রাজধানীর শাহবাগ থেকে ফুল কিনে এনে ইতোমধ্যেই পাইকারিভাবে ৮০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করে ফেলেছেন তিনি। আরাফাত বলেন, ‘বাকি যা আছে আশা করছি দুদিনে বিক্রি হয়ে যাবে।’

ফুলের দোকানে মাথার রিংয়ের অর্ডার দিতে এসেছেন আনন্দমোহন কলেজের শিক্ষার্থী আফসানা মিমি। তিনি বলেন, ‘বসন্ত উৎসবের জন্য রিংয়ের অর্ডার দিলাম। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করতেই এই আয়োজন।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর