রাজশাহীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নে আ.লীগের চমক

রাজশাহী, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 02:14:08

আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে এবার রাজশাহীতে চমক এসেছে। জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে পাঁচটি উপজেলাতে নতুন মুখ এসেছে। মাত্র একজন বর্তমান চেয়ারম্যান দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। বাকি তিন উপজেলায় যারা মনোনয়ন পেয়েছেন, তারা গত উপজেলা নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছিলেন।

তবে উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এবং তাদের মদদপুষ্টরাই মনোনয়ন পেয়েছেন বলে অভিযোগ দলীয় নেতাকর্মীদের।
তারা বলছেন, মনোনয়ন প্রাপ্তদের অধিকাংশেরই নাম ছিল তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকার নিচের দিকে।

তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা বলছেন, কোনো প্রকার তদবির নয়, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে দলের মনোনয়ন বোর্ডের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তেই উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বাগমারা উপজেলায় এবার বাদ পড়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু। এই উপজেলায় আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অনিল কুমার সরকার।

পবা উপজেলায় এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন- জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মুনসুর রহমান, তানোরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না, পুঠিয়ায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জিএম হিরা বাচ্চু, দূর্গাপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম।

এছাড়া বাঘায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েবউদ্দীন লাভলু, গোদাগাড়ীতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, চারঘাটে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম ও মোহনপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম।

এদের মধ্যে পবার মুনসুর রহমান, মোহনপুরের আব্দুস সালাম, দূর্গাপুরের নজরুল ইসলাম ও চারঘাটের ফকরুল ইসলাম গত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছিলেন। নজরুল ইসলাম ছাড়া বাকিরা পরাজিত হন।

আর নতুন মুখ হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন বাগমারায় অনিল কুমার সরকার, বাঘায় লায়েব উদ্দিন লাভলু, তানোরে লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না, গোদাগাড়ীতে জাহাঙ্গীর আলম ও পুঠিয়ায় জিএম হিরা বাচ্চু। এদের মধ্যে এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন লায়েব উদ্দিন লাভলু।

এছাড়া এবার মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েছেন বাগমারার বর্তমান চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু, গোদাগাড়ীতে গতবারের দলীয় প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ ও পুঠিয়ায় শাহরিয়ার আলম কনক।

মনোনয়নের বিষয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘তৃণমূলে সভা করে যাদের নাম তালিকায় প্রথমদিকে রাখা হয়েছিল, দেখা যাচ্ছে তারাই মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। আর যাদের নাম ছিল নিচের দিকে, অদৃশ্য কারণে তারাই মনোনয়ন পেয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মনোনয়নপ্রাপ্তরা প্রত্যেকেই প্রায় স্থানীয় সংসদ সদস্যদের ছত্র-ছায়ায় রাজনীতি করেন। তৃণমূলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কেমন, তা এলাকায় গেলেই বোঝা যাবে’।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘দলের মনোনয়ন বোর্ড যাদের মনোনয়ন দিয়েছেন, তাদেরকে বিজয়ী করতে সবধরনের প্রচেষ্টা চালানো আমার দায়িত্ব।’

তবে মনোনয়ন নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

মনোনয়ন সম্পর্কে রাজশাহী-৪ আসনের এমপি ও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক জানান, তার উপজেলায় বর্ধিত সভা করে প্রার্থীদের তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছিল। পরে জেলা থেকে তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এরপর দলের মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে।

উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন সামনে রেখে গত সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে আওয়ামী লীগ। যা শেষ হয় বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি)। চেয়ারম্যান পদে রাজশাহী নয়টি উপজেলায় ৫৫ জন নেতা দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ তালিকা করে তাদের নাম কেন্দ্রেও পাঠিয়েছিল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর