পুলিশের অভিযানে গা-ঢাকা দিয়েছে নবাবগঞ্জে মাটিখেকোরা

ঢাকা, জাতীয়

মো.সাদের হোসেন বুলু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 02:00:51

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কৈলাইল, শোল্লা, বাহ্রা, আগলা, নয়নশ্রী, শিকারীপাড়া ও বারুয়াখালী ইউনিয়নে প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই দীর্ঘদিন অবৈধ মাটি বিক্রির ব্যবসা চালাচ্ছিল এক শ্রেণির কথিত মাটিখেকোরা। সম্প্রতি এ বিষয়ে কয়েকটি দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে এ বিষয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার কারণে নবাবগঞ্জে এখন গা-ঢাকা দিয়েছে কথিত মাটিখেকোর দল। তবে তারা রাতের আঁধারে মাটি উত্তোলনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালালেও তাদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়। ফলে মাটি উত্তোলন বন্ধ থাকলেও স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে নানা রকমের কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছে এটা পুলিশের লোক দেখানো অভিযান।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, বছরের পর বছর উপজেলার কৈলাইল ও ইছামতি নদী সংলগ্ন সাইলকা এলাকায় মাছ চাষের নামে অসংখ্য ‘অবৈধ’ পুকুর খনন করেন ক্ষুদু মেম্বার। এতে শতশত বিঘা কৃষি জমি নষ্ট করলেও উপজেলা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এলাকাতে নতুন নতুন মাটিখেকো তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে কৈলাইল গ্রামের শহিদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা আবুল কাসেম, মেলেং গ্রামের আবুল ওহাব উল্লেখযোগ্য।

আরও পড়ুন

নবাবগঞ্জে মাটিখেকোদের উৎপীড়ন চরমে

এছাড়া দৌলতপুর, মালিকান্দা, নয়াকান্দা এলাকায় মফছের আলীসহ যুবলীগের ইউনিয়ন পর্যায়ে দুই জন ও উপজেলা পর্যায়ের একজন নেতা দীর্ঘ সময় ধরে অবৈধ মাটি ও বালুর ব্যবসা করছেন। তাদের সঙ্গে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের বেশ দহরম মহরম রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

নয়নশ্রী এলাকার খৈমদ্দিনসহ একটি সিন্ডিকেট কয়েক বছর যাবত অবৈধ মাটি উত্তোলন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত বলে  জানিয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা আবুবক্কর। তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষি জমির মাটি কাটা বন্ধে বহুবার উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবগত করেছি। তিনি আমাদেরকে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। কিন্তু আমরা গরীব কৃষক, লিখিত অভিযোগ করলে এলাকায় থাকতে পারব না।’

বাহ্রা এলাকার বাসিন্দা মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বাহ্রা ও গাজীখালী এলাকার রেজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গাভিটা ও সাবেক গণপরিষদ সদস্য আবু মো. সুবেদ আলী সাহেবের সাইলাকা এলাকায় অবস্থিত একটি প্রজেক্টের পূবদিক থেকে  দীর্ঘদিন ধরে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে কিছুই বলেনি। বরং সে নিজেকে একজন সফল মাটি ব্যবসায়ী হিসেবে  প্রচার করে যাচ্ছেন।’

এই রাজ্জাকের কারণে প্রায় ২০০ বিঘা ফসলি কৃষিজমি বিনষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভাঙ্গাভিটা এলাকার সৌরভ মনি। নবাবগঞ্জের কৃষি জমি রক্ষায় সকলককে এক হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিংজোর গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বেশ কয়েকজন মাটি ব্যবসায়ী আছেন যারা বর্তমানে রাতে মাটি কাটার চেষ্টা করছেন। প্রশাসনের উচিত রাতের আঁধারে কেউ মাটি কাটার চেষ্টা করলে তাকে প্রতিহত করা।’

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘জনগণের কল্যাণে আমরা তাদের পাশে রয়েছি। কোথাও  আইন না মেনে মাটি কাটা হলে আমাকে অবগত করুন সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর