‘কাস্টমসের মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে বেশি’

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 01:02:50

কাস্টমসের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, ‘হুন্ডি থেকেও বেশি টাকা কাস্টমসের মাধ্যমে বিদেশে চলে যাচ্ছে। কস্টমসে ওভার ইনভয়েসের (অতিরিক্ত) মাধ্যমে এ টাকা পাচার হচ্ছে বলে দুদকের তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে। তাই কাস্টমস কমিশনারের কাছে তাদের তালিকা চাওয়া হয়েছে।’

রোববার (২৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। এ কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকে এখন সৎভাবে জীবন যাপন করতে চান। ভূমি অফিসের তহসিলদাররা খুবই দুর্নীতিগ্রস্ত। অনেক এসিল্যান্ড তহসিলদারের মাধ্যমে ঘুষ খায়। এদের সাবধান করছি।’

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার কথা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার ভিত্তি। আমাদের এ ভিত্তিকে শক্ত করতে হলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের খোজঁখবর রাখতে হবে। সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে আমাদের বাচ্চাদের খবর নিন। লেখাপড়া কেমন হচ্ছে খবর নিন।’

তিনি আরও বলেন ,‘দেশে সুনাগরিক গড়তে হলে শিক্ষার খবর রাখতে হবে। জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য শিক্ষা নয়, মানুষ হওয়ার জন্য শিক্ষা প্রয়োজন।’

সাসটেনেবল ডেভলাপমেন্ট গোল (এসডিজি) ২০৩০ অর্জনের জন্য শিক্ষা বিকল্প নেই মন্তব্য করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘রাস্তা ঘাট, দালান, ব্রিজ দেশের সমস্ত উন্নয়ন বৃথা। রাস্তা ঘাট ব্রিজ দিয়ে সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজরা চলাফেলা করলে হবে না, মানুষ চলাফেলা করতে হবে। ফলে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে, সুনাগরিক সৃষ্টি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি করে দুদক থেকে কেউ বাঁচতে পারবে না। আমিও না। এ যাবদ দুদকের প্রায় ২০জন কর্মকর্তাও দুদকের জালে আটকে গেছে। সুতরাং আমি সাবধান করছি, দুদকের হাতে ধরা পরলে বাচাঁর উপায় নেই।’

দুদকের মামলার নাম ক্যান্সার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুদক কারো জন্য মামলা করে না, মামলা করার আগেই দুর্নীতি বন্ধ করার নীতিতে আমরা এগুচ্ছি। কারও বিরুদ্ধে দুদকের মামলা হলে ক্যান্সার ধরে যাবে। কেউ অনৈতিক কাজ করার জন্য চাপ দিলে উল্টো আপনারা চাপ দিবেন। কেউ আপনাদের কিছুই করতে পারবে না। চাকরি করেন সেটি থেকে শুধু বদলী করতে পারবে। প্রয়োজনে বদলী হবেন। কোনো কাজ করতে হলে লিখিত নিবেন। লিখিত কাগজ থাকলে দুদকের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘ডাক্তাররা গ্রামে যেতে চান না। কর্মস্থলে উপস্তিত থাকেন না। শিক্ষার পাশাপাশি সুস্বাস্থ্যও প্রয়োজন। কোনো বাচ্চা মেধাবী হলে চলবে না তাকে স্বাস্থ্যবানও হতে হবে। আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে , মানুষের সেবা করার জন্য ডাক্তাররা কর্মস্থলে থাকতে হবে। সরকার প্রচুর ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছে সুতরাং গ্রামের অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাট আদায়ে প্রচুর দুর্নীতি হচ্ছে। ঘুষ লেনদেন করার ক্ষেত্রে যে ঘুষ দিচ্ছেন তাকে আমরা ধরার চেষ্টা করছি। ঘুষ দাতাও এবার বাঁচতে পারবেন না। সবাই সর্তক হন।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর