আরিফের কাছে উন্নয়ন মানেই যেন ‘ভাঙা-গড়া’

সিলেট, জাতীয়

নূর আহমদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, সিলেট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 02:44:19

আরিফুল হক চৌধুরী। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র। সবাইকে অনেকটা তাক লাগিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। এই আরিফের কাছে উন্নয়ন মানেই যেন ‘ভাঙা-গড়ার’ কাজ করতে হবে। অবশ্য এক্ষেত্রে সরকারের সমর্থন আদায়েও সফল হয়েছেন বিএনপির এই নেতা।

দুই কূল রক্ষা করে চলা এই আরিফুল হক চৌধুরী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হলে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আরিফ। অবশ্য এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের কঠোর সমালোচনায় পড়তে হয় তাকে। তবে তার যুক্তি স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি মেয়র হিসেবে মোমেনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অতীতের মতো সকল ঝড়-ঝাপটা সামলে নিয়ে আমৃত্যু বিএনপিতে থাকার ঘোষণা দেন তিনি।

বরাবরের কৌশলী আরিফুল হক চৌধুরী সদ্য বিদায়ী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মনও জয় করতে পেরেছিলেন। তখন সরকারের উন্নয়নযজ্ঞে নিজেকে সম্পৃক্ত করে জনগণের মন জয় করেছিলেন তিনি। তাইতো গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় ‘উন্নয়নের আরিফ, জনতার কামরান’ এমন আলোচনা ছিল মানুষের মুখে মুখে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে নানা সহিংসতার পর বিকেলে হতাশ হয়ে বাসায় ফিরে যাওয়া আরিফ সন্ধ্যায় হেসেছিলেন বিজয়ের হাসি। সেই আরিফ নতুন সরকার আসার পর আরও উদ্যমী। তারই হাতে চলছে নগরীর পাড়ামহল্লায় ‘ভাঙা গড়ার’ কাজ।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে মেয়রের ক্ষমতা ছাড়ার আগে ফুটপাত উদ্ধারে নেমে হকারদের তোপের মুখে পড়েছিলেন আরিফ। তখন নগর ভবনে হামলার ঘটনাও ঘটেছিল। নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় হকারদের কাছে লিফলেট বিতরণ করতে গিয়েও আরিফুল হক চৌধুরী পড়েছিলেন মধুর বিড়ম্বনায়।

সড়কের মধ্যে ফল-সবজি নিয়ে বসে থাকা হকারদের কাছে লিফলেট নিয়ে এগিয়ে গেলে তারা ভাবে উচ্ছেদে এসেছেন আরিফ। ফলে লিফলেট না নিয়ে ভ্যান নিয়ে দৌড়াতে থাকে হকাররা। নির্বাচনের আগে নগরীতে বেশ আলোচিত ছিল এই বিষয়টি।

একাদশ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে যখন বিএনপি প্রার্থীরা পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে কাতরাচ্ছেন, বিশাল কর্মী বাহিনী যখন হতাশ, তখন আরিফুল হক চৌধুরী ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি পরদিনই নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বাধাদানকারী স্থাপনা গুড়িয়ে দিতে ছিলেন ব্যস্ত। নির্বাচনের আগে ও পরে ভাঙা-গড়া নিয়েই আছেন আরিফুল হক চৌধুরী। কেবল সাধারণ নাগরিকের নয়, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের দেয়ালেও হাতুড়ি চালিয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী।

তার মতে এসব উচ্ছেদ অভিযানে কারো ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি দখল করা হচ্ছে না, বরং সরকারের ভূমি উদ্ধার হচ্ছে। এতে দু-একজন মন খারাপ করলেও সাধারণ নাগরিকদের জন্য সেবার পথ প্রসারিত হচ্ছে। বেশিরভাগ লোকজন স্বেচ্ছায় রাস্তা প্রশস্তকরণে সহযোগিতা করছে। আর সবকিছু হচ্ছে যথাযথ আইন অনুসরণ করেই। তিনি নাগরিক সেবা নিশ্চিত করণে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর