লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র হাত বাড়ালেই মিলছে খুব সহজে নিষিদ্ধ মাদক সামগ্রী। বহিরাগত ও স্থানীয় মাদকসেবী এবং বখাটেদের আনাগোনায় অতিষ্ঠ উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ।
স্থানীয় থানা পুলিশের নিকট বারবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায়, এলাকার যুব সমাজকে রক্ষার্থে মাদক প্রতিরোধে অনেকটা বাধ্য হয়েই স্থানীয়রা লাঠি হাতে পাহারা বসিয়েছে গ্রামের মোড়ে মোড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সীমান্তবর্তী উপজেলাটির বিভিন্ন গ্রামে প্রতিনিয়ত ভিড় করছে বহিরাগত ও স্থানীয় মাদক সেবীরা। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে-ঘাটে পা বাড়ালেই দেখা যায় পরিত্যক্ত মাদকের বোতল। মাদকের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে জুয়া,পতিতাবৃত্তিসহ বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এতে করে এলাকার স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ যুবসমাজ মাদকে আসক্ত হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এদিকে মাদক ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে এলাকার শিক্ষার্থী ও যুব সমাজকে রক্ষার্থে পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলার মদাতি ইউনিয়নের হাজরানিয়া গ্রামবাসী। সমাজকল্যাণ পরিষদ নামে একটি সংগঠন তৈরি করে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে হাতে লাঠি নিয়ে গ্রামের মোড়ে মোড়ে পাহারা বসিয়ে মাদক প্রতিরোধের চেষ্টা করছে তারা। এতে করে অল্প দিনের ব্যবধানে এই গ্রামে কমে এসেছে মাদকের প্রভাব। ইতোমধ্যেই এলাকাবাসীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে এক মাদক কারবারিসহ তিন মাদক সেবী। গ্রামবাসীর এমন পদক্ষেপে সাধুবাদ জানাচ্ছে সবাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় সমাজকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রশিদুল হোক সোনা বলেন, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে এলাকাবাসীর এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে সহযোগিতা নেই থানা পুলিশের। তাদেরকে বারবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে নিজেরাই মাঠে নেমেছেন মাদক প্রতিরোধে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম বার্তা২৪কম-কে বলেন, হাজরানিয়া গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে করে এলাকায় মাদকের প্রভাব কমে গেছে। এলাকাবাসীর সাথে স্থানীয় থানা পুলিশের সহযোগিতা থাকলে গোটা কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে মাদক নির্মূল করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির বার্তা২৪কম-কে বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীসহ যুবক ও সমাজকে রক্ষায় হাজরানীয়া গ্রামবাসীর এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগটি ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছে জেলাজুড়ে। এলাকাবাসীর এমন উদ্যোগকে প্রশাসনিকভাবে সহায়তা করা হলে অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ হবে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ, এমনটি মনে করছেন স্থানীয়রা।