তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ

, জাতীয়

গুলশান জাহান সারিকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-04-17 17:33:50

ভ্যাপসা গরম ও তীব্র তাপদাহের মধ্য দিয়ে চৈত্রের বিদায়। বৈশাখের শুরু থেকেই রাজধানীতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠানামা করছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীসহ আশেপাশে একপশলা বৃষ্টি হলেও কমেনি তাপদাহ। আজ সকাল থেকে আবার তীব্র তাপদাহ বইছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে।

অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা। রোদ ও গরমে দেহে পানিশূন্যতা, মাংসপেশিতে টান ধরা, ক্লান্তি, অসার ভাব, হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এগুলো সবই খরতাপের প্রভাবে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মহাখালী ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ (আইসিডিডিআর, বি) হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী ভর্তি হয়েছেন ডায়রিয়া ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে।

হাসপাতালের তথ্য অনুসারে, সাড়ে তিন হাজার রোগীর তিন ভাগের দুই ভাগই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। প্রচণ্ড গরমে শরীরে পানিস্বল্পতা ও ফুড পয়জনিংয়ের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধের আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। অতিরিক্ত রোদ, তাপ থেকে নিরাপদ থেকে সচেতনতা অবলম্বন করে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতাল ভর্তি হয়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবী খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, বাইরের খাবার খেয়ে আমার এ অবস্থা। গরমে কয়েকদিন রাস্তার ধারের আখের জুস, লেবুপানি খেয়েছি। গতকাল রাত থেকে খারাপ অবস্থা শুরু হয়েছে, আজ সকালে ভর্তি হয়েছি।

চার বছরের ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আসমা বেগম। তিনি জানান, ফুড পয়জনিং থেকে ছেলের ডাইরিয়া হয়েছে। হঠাৎ অতিরিক্ত গরমে আর বাইরের খাবারের জন্য সম্ভবত এমন হয়েছে।

আইসিডিডিআর বি হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা আফরোজ বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৫০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে পানিশূন্যতা ও ডায়রিয়া নিয়ে। মার্চের শেষ থেকে গরমের প্রভাব বাড়ার কারণে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে বয়স্ক ও শিশুর সংখ্যা বেশি বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, তীব্র তাপদাহে সুস্থ থাকতে প্রথমত সচেতন হতে হবে। প্রাত্যহিক রুটিনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিতে হবে। অতিরিক্ত তাপে হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে বাইরে কম বের হতে হবে। বেশি করে নিরাপদ বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। ডিহাইড্রেশন হতে দেওয়া যাবে না। বাইরের খাবার, বোতলজাত ফলের জুস, ফুটপাতের খাবার, ভাজাপোড়া, তেলযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে, কম মশলাযুক্ত ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। চা, কফি কম খেতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, নিয়মিত গোসল করতে হবে।

বাচ্চাদের ঘরের বাইরে যেতে দেওয়া যাবে না। মানসিক চাপ মুক্ত রাখতে হবে। গরমে হালকা পোশাক পরতে হবে। ডায়রিয়া হলে সঠিক নিয়মে স্যালাইন খেতে হবে।

এছাড়া বেশি অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর